স্বর্ণের পর বিশ্ববাজারে রুপার দামেও নতুন ইতিহাস, বাড়ছে চাহিদা?

১১ ঘন্টা আগে
স্বর্ণের পর এবার বিশ্ববাজারে রুপার দামও নতুন রেকর্ড গড়েছে। ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও বিনিয়োগকারীদের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের পাশাপাশি মার্কিন সুদের হার কমার প্রত্যাশায় রুপার দাম সর্বকালের সর্বোচ্চে পৌঁছায়।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (৮ অক্টোবর) প্রতি আউন্স স্পট রুপার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৫৭ ডলার, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ। মূল্যবান ও শিল্প-দুই খাতেই ব্যবহৃত এই ধাতুটির দাম চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়েছে। এটি ২০১০ সালের পর সবচেয়ে বড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

 

একই দিনে স্বর্ণের দামও প্রথমবারের মতো ৪ হাজার ডলার প্রতি আউন্সের সীমা ছাড়ায়। তামার দামও পৌঁছে যায় ১৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে।

 

আরও পড়ুন: একদিনের ব্যবধানে রুপার দামে ফের রেকর্ড, ভরিতে বাড়ল কত?

 

ওএএনডিএ’র বিশ্লেষক জাইন ভাওদা বলেন, ‘অনেক খুচরা বিনিয়োগকারী রুপাকে এখন নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে দেখছেন। এতে রুপার চাহিদা বাড়ছে এবং দামও ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। সরবরাহ সংকট ও শিল্প খাতে চাহিদা বাড়ার কারণে আগামী ছয় মাসে রুপার দাম ৫৫ ডলার প্রতি আউন্সে পৌঁছাতে পারে।’

 

চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের কোমেক্স গুদামে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে, যা লন্ডনের স্পট মার্কেটেও তারল্য সংকট তৈরি করেছে-আর এটি রুপার দাম আরও বাড়িয়েছে।

 

এইচএসবিসি’র বিশ্লেষক জেমস স্টিল জানান, মার্কিন আমদানি শুল্কের আশঙ্কায় বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এতে লন্ডন স্পট ও নিউইয়র্ক ফিউচার দামের মধ্যে বড় পার্থক্য তৈরি হয়, যার ফলে নিউইয়র্কে স্বর্ণ ও রুপা স্থানান্তর লাভজনক হয়ে ওঠে।

 

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ তালিকায় রুপা যুক্ত হওয়ায় সম্ভাব্য শুল্ক নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। এর প্রভাবে গত সপ্তাহে কোমেক্সের শেয়ারের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।

 

লন্ডন বুলিয়ান মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের (এলবিএমএ) তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের শেষে লন্ডনের ভল্টে ছিল ২৪ হাজার ৫৮১ মেট্রিক টন রুপা, যার মূল্য প্রায় ৩৬.৫ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে প্রতি আউন্স স্বর্ণ কিনতে লাগে ৮২ আউন্স রুপা; যা গত এপ্রিলে ছিল ১০৫ আউন্স। এতে বোঝা যাচ্ছে, স্বর্ণের মতো রুপার দামও দ্রুত বাড়ছে।

 

আরও পড়ুন: বিশ্ববাজারেও স্বর্ণের দামে ইতিহাস, ছুঁলো ৪ হাজার ডলারের মাইলফলক

 

মেটালস ফোকাসের বিশ্লেষক ম্যাথিউ পিগট বলেন, ‘রুপা এখন শুধু শিল্প ধাতু নয়, বিনিয়োগেরও শক্ত অবস্থান তৈরি করছে। আমরা আশা করছি, ২০২৬ সালের মধ্যে রুপার দাম ৬০ ডলার প্রতি আউন্স ছাড়িয়ে যাবে।’

 

শুধু বিনিয়োগ নয়, সৌর প্যানেল, ইলেকট্রনিক্স ও বৈদ্যুতিক গাড়ির মতো প্রযুক্তি খাতেও রুপার ব্যবহার বাড়ছে, যা দাম বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে। মরগান স্ট্যানলির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর রুপা-সমর্থিত এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডে (ইটিএফ) বিনিয়োগ বেড়েছে এবং চীনে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প বৃদ্ধির কারণে শিল্প খাতে রুপার চাহিদা আরও বাড়ছে। যদিও সৌর খাতে বৃদ্ধির হার কিছুটা ধীর হতে পারে, তারপরও রুপার দাম নিকট ভবিষ্যতে শক্ত অবস্থান ধরে রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন