রাজধানীর উত্তরায় বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে নিহত পাইলট তৌকির ইসলাম সাগরের মা-বাবা, বোন সোমবার (২১ জুলাই) বিকেল পাঁচটা পর্যন্তও জানতেন না তিনি আর নেই। তৌকির বেঁচে আছেন এ আশায় বিকেল ৫টা ১৪ মিনিটে বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে করে তারা ঢাকায় রওনা হন।
তবে বিকেল ৪টার দিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় এই উদীয়মান বৈমানিকের।
বাসার মালিক আতিকুল ইসলাম জানান, তৌকির ইসলাম সাগর প্রথমবারের মতো একা প্রশিক্ষণ বিমান চালাবেন এই খবরে পুরো পরিবারের সদস্যরা আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত ছিলেন। দুপুরের পর তারা বিমান বিধ্বস্তের খবর পান। সে সময় জানতে পারেন সাগর ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তিনি জানান, সাগরকে দেখতে পরিবারের সদস্যরা বিমানযোগে ঢাকা যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলে বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে একটি বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করা হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে র্যাবের একটি মাইক্রোবাসে করে ভাড়া বাসা থেকে তাদেরকে রাজশাহী শাহমখদুম বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।

আতিকুল ইসলাম আরও জানান, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের বাবা, মা, বোন ও বোন জামাই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে তার মৃত্যুর খবর জানতেন না। পরিবারের সদস্যরা জানেন সাগর জীবিত ও চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেন পাইলট তৌকির: আইএসপিআর
রাজশাহীর উপশহরের তিন নম্বর সেক্টরের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করত সাগরের পরিবার। বাবা তহুরুল ইসলাম, মা সালেহা খাতুন, বোন সৃষ্টি ও বোনজামাই মিলে গড়ে তুলেছিলেন ছোট্ট একটি সুখের সংসার।
আরও পড়ুন: ভবনের এক পাশ দিয়ে ঢুকে আরেক পাশে বের হয়ে যায় বিমানটি!
সাগরের জন্ম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কানসাট এলাকায়। পড়াশোনা শুরু রাজশাহীর ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে। এরপর যোগ দেন পাবনা ক্যাডেট কলেজে। ছোটবেলা থেকেই আকাশ ছিল তার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। সে আকাশেই আজ তিনি চিরনির্বাসিত।
মাত্র এক বছর আগে বিয়ে করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকাকে। বাবা তহুরুল ইসলাম আমদানি-রফতানি ব্যবসা করেন।