স্ত্রীর পক্ষ থেকে পৃথক কোরবানি করতে হবে কি?

৩ সপ্তাহ আগে
কোরবানি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি অন্যতম তাৎপর্যমণ্ডিত ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। এতে আছে আত্মত্যাগের ঐতিহাসিক মহিমা। এটি একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। কোরবানি শুরু হয়েছিল হজরত আদম (আ.)-এর দুই ছেলে হাবিল ও কাবিল থেকে।

সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমানের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ নামাজের সাথে যুক্ত করে কোরবানি করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,

 

اِنَّاۤ اَعۡطَیۡنٰکَ الۡکَوۡثَرَ فَصَلِّ لِرَبِّکَ وَ انۡحَرۡ اِنَّ شَانِئَکَ هُوَ الۡاَبۡتَرُ

 

অর্থ: নিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি। সুতরাং তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো। নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ। (সুরা কাওসার: ১-৩)

 

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

 

مَن كان له سَعَة ولمْ يُضَحِّ فلا يَقْرَبَنّ مُصَلّانا 

 

অর্থ: যার কোরবানি করার সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১২৩)

 

কোরবানি ওয়াজিব এমন প্রত্যেক মুসলমান, প্রাপ্তবয়স্ক, জ্ঞানসম্পন্ন (যিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন নন) মুকিম (যিনি মুসাফির নন) প্রত্যেক এমন পুরুষ ও নারীর ওপর যারা ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ অর্থাৎ সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মালিক থাকে।

 

আরও পড়ুন: আগে ঋণ পরিশোধ করবে নাকি কোরবানি করবে?


নগদ অর্থ, সোনা-রূপা, অলংকার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজনে লাগে না এমন জমি, প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সব আসবাব কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিন্ন ভিন্ন সম্পদের একত্র মূল্যের পরিমাণ যদি সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমান হয়, তাহলেও কোরবানি ওয়াজিব হবে।

 

কোরবানির ক্ষেত্রে নেসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয়; বরং জিলহজের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে যে কোনো সময় নেসাবের মালিক হলেও কোরবানি ওয়াজিব হবে।

 

এক পরিবারে একাধিক ব্যক্তি সামর্থ্যবান হলে প্রত্যেকের পক্ষ থেকে পৃথক কোরবানি করা ওয়াজিব। স্বামী ও স্ত্রী দুজনই সামর্থ্যবান হলে স্বামী ও স্ত্রীর পক্ষ থেকে পৃথক কোরবানি করতে হবে। স্বামীর কোরবানি স্ত্রীর জন্য যথেষ্ট হবে না। একইভাবে বাবার কোরবানি সামর্থ্যবান ছেলে বা মেয়ের জন্য যথেষ্ট হবে না যদি তারা সামর্থ্যবান হয় অর্থাৎ উল্লিখিত পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়।

 

ছাগল-ভেড়া ইত্যাদি ছোট পশু কোরবানির ক্ষেত্রে প্রত্যেকের জন্য আলাদা পশু কোরবানি করতে হবে। উট-গরুর মতো বড় পশু কোরবানি করা হলে এক পশুতে সাত জন পর্যন্ত শরিক হতে পারবে। স্বামী-স্ত্রী দুজনই সামর্থ্যবান হলে তাদের দুজনের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল বা ভেড়া কোরবানি করতে হবে অথবা গরু কোরবানিতে দুটি অংশে শরিক হতে হবে।

 

আরও পড়ুন: কোরবানি না দিয়ে সেই অর্থ দান করা নিয়ে ইসলাম কী বলে?


একটি গরু স্বামী-স্ত্রী দুজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করলে তাদের দুজনের কোরবানি আদায় হয়ে যাবে। পরিবারের সাত জন পর্যন্ত সামর্থ্যবান সদস্যের পক্ষ থেকে একটি গরু কোরবানি যথেষ্ট হবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন