স্ত্রীর কিডনিতে নতুন জীবন পেয়ে হেলিকপ্টারে ঘরে ফিরলেন কুদ্দুস

১ সপ্তাহে আগে
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে যখন কেউ বলেন— আমি আবার বাঁচলাম, যেন নতুন করে জন্ম নিলাম। তখন বোঝা যায় জীবন কতটা মূল্যবান। আর সেই জীবন যদি উপহার দেন একজন স্ত্রী নিজের কিডনি বিলিয়ে; তবে সেই গল্প শুধু একটি পরিবারের নয়, পুরো সমাজের জন্য এক অনন্য মানবিক বার্তা বয়ে আনে। এমনই এক গল্প যশোরের শার্শার কুদ্দুস বিশ্বাসের।

বিশিষ্ট মাছ ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক কুদ্দুস বিশ্বাস, যিনি ‘মাছ কুদ্দুস’ নামে যশোরের শার্শায় পরিচিত, সম্প্রতি সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন তার প্রিয় গ্রামে বাঁগআচড়ায়। তবে এই ফেরা ছিল ভিন্নরকম। হেলিকপ্টারে বাড়ি ফেরার পেছনে আছে এক ভালোবাসার গল্প।


জানা গেছে, কুদ্দুস বিশ্বাসের দুটি কিডনিই অচল হয়ে গিয়েছিল বছর খানেক আগে। জীবন থমকে গিয়েছিল বিছানার মাঝে। সেই সময় স্ত্রী ফারজানা বেগম একটি কিডনি দান করে এগিয়ে আসেন। ভালবাসার এক কোমল উদাহরণ স্থাপন প্রিয় মানুষটিকে দিয়েছেন বেঁচে থাকার আলো।


চিকিৎসার জন্য কুদ্দুস বিশ্বাস চার মাস ছিলেন তুরস্কে। সেখান থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে আসার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন, প্রথমেই ফিরবেন নিজের মাটির কাছে, নিজের শেকড়ে। আর তখনই এলাকাবাসী আয়োজন করে এক হৃদয়স্পর্শী স্বাগত আয়োজন।


শুক্রবার (২০ জুন) বিকেলে ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে হেলিকপ্টারে যাত্রা করে কুদ্দুস বিশ্বাস পৌঁছান পিপড়াগাছি ইকোপার্ক মাঠে। সেখানে অপেক্ষা করছিল হাজারো মানুষ— হাতে ফুল, গলায় মালা, চোখে অশ্রু আর হৃদয়ে কৃতজ্ঞতা।


আরও পড়ুন: সন্তানকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দিলেন বাসন্তী রানী


গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কুদ্দুস বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা আমাকে নতুন জীবন দিয়েছেন। এই জীবন শুধু আমার নয়, এ জীবন মানুষের জন্য। স্ত্রী ফারজানার প্রতি আমি চিরঋণী, আর এই গ্রামের প্রতিটি মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’


স্থানীয় সাংবাদিক শেখ কাজিম বলেন, ‘একজন স্ত্রী তার স্বামীর জীবন বাঁচাতে নিজের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ দান করেছেন— এটাই তো প্রকৃত ভালোবাসা। এমন ঘটনা সমাজে বিরল হলেও এই গল্প হতে পারে অসংখ্য মানুষের জন্য প্রেরণার উৎস।’


স্থানীয়রা জানায়, কুদ্দুস বিশ্বাসের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ করে প্রায় তিন শতাধিক মানুষ। শুধু ব্যবসায়ীক সফলতাই নয়, তিনি সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজেও ব্যাপকভাবে জড়িত। তার সুস্থ হয়ে ফেরা মানে আবারও অসংখ্য মানুষের জীবনে আলোর রেখা বয়ে যাওয়া।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন