স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার দায়ে স্বামীসহ দুজনের যাবজ্জীবন

৩ সপ্তাহ আগে
ভোলার চরফ্যাশনে স্ত্রী ও সন্তানকে জবাই করে হত্যার অভিযোগে স্বামী মো. মাহাবুব আলম ওরফে মফু আলম ও দেবর মো. ইব্রাহিমকে যাবজ্জীবন (আমৃত্যু) কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দোষী সাবস্ত না হওয়ায় মান্নান মাঝি নামে একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোলার চরফ্যাশন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. শওকত হোসাইন এ রায় দেন।


মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, জমির বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজের স্ত্রী সন্তানকে হত্যা করেন চরফ্যাশন উপজেলা  চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের চরআফজাল গ্রামের মাহাবুব আলম ওরফ মফু আলম (৪৮)। তাকে সহযোগিতা করেন মাহাবুবের ছোট ভাই ইব্রাহিম (৩৫)।


জানা যায়,  প্রতিবেশী মিলনের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ২০১৮ সালের ৩০ মার্চ রাতে নিজ বসতঘর ঘুমন্ত স্ত্রী জাহানারাকে গলা কেটে হত্যা করেন স্বামী মাহাবুব আলম ও তার ভাই ইব্রাহিম। এসময় মা জাহানারার পাশে ঘুমিয়ে থাকা ৮ বছরের ছেলে আবির  মায়ের হত্যাকাণ্ড দেখে ফেলায় তাকেও হত্যা করা হয়। পরে তাদের লাশ বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে রাখে। হত্যার দায় মিলন নক্তির ওপর চাপানোর উদ্দেশ্যে ইব্রাহিম তার বড় ভাই ও জাহানারার স্বামী মাহাবুবকে ঘরের সামনে একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখে। এরপর ইব্রাহিম ডাক চিৎকার শুরু করে আর বলতে থাকে মিলন নক্তি জাহানারা ও আবিরকে হত্যা করে পালিয়েছে বলে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চেয়েছে।

আরও পড়ুন: নড়াইলে ডাকাতির সময় গৃহকর্তাকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ৫ জনের যাবজ্জীবন

কিন্তু নিহত জাহানারার বাবা মো. সৈয়দ আলী চৌকিদার বাদি হয়ে জাহানারার স্বামী মাহাবুব আলম, মাহাবুবের ভাই ইব্রাহিম ও তাদের পিতা মান্নান মাঝিসহ ৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন। চরফ্যাশন থানা পুলিশ তদন্ত শেষে মাহাবুব আলম, মাহাবুবের ভাই ইব্রাহিম ও তাদের পিতা মান্নান মাঝির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়।  


বাদীপক্ষ নারাজি জানালে আদালত পুনরায় ডিবি পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। ডিবি পুলিশ তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি ওই তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। মামলায় ১৭ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ গ্রহণ করে আদালত। মামলার প্রধান আসামি মাহাবুব আলম আদালতে দোষ স্বীকার করে।  দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আজ প্রধান আসামি মাহাবুব আলম এবং তার ছোট ভাই ইব্রাহিমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। সেই সাথে প্রত্যেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। 


অপরদিকে নির্দোষ প্রমাণ হওয়ায় মান্নান মাঝিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। 

আরও পড়ুন: রান্না ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যায় প্রতিবেশীর যাবজ্জীবন

এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডিশনাল পিপি অ্যাডভোকেট হযরত আলী হিরণ বলেন, রায়ে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রায়ে সংক্ষুব্ধ আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাইনুল ইসলাম নাবীল সরমান জানান, তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন