স্ত্রী আওয়ামী লীগ করায় তালাক দিতে স্বামীকে মারধরের অভিযোগ

৩ সপ্তাহ আগে
রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ করায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে এলাকা ছাড়া করতে রাজি না হওয়ায় স্বামীকে মারধর করার অভিযোগ ওঠেছে যুবদল কর্মীদের বিরুদ্ধে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নগরের চন্দ্রিমা থানার হাজরাপুকুর মহল্লায় মারধরের ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী দম্পতি হলেন- নগরের চন্দ্রিমা থানার হাজরাপুকুর মহল্লার বাসিন্দা মিজানুর রহমান ও বীনা মজুমদার। মিজানুর রহমান ব্যবসায়ী। বীনা গৃহিনী। বীনা ২০১৩ ও ২০২৩ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৯, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করেছিলেন।

 

ভুক্তভোগীরা জানান, শনিবার তাদের বাড়িতে ছিল অনুষ্ঠান। সন্ধ্যায় পাড়ার মাঠে শাহমখদুম থানা যুবদলের সাবেক সদস্য মো. সনিসহ কয়েকজন নেতাকর্মী মিজানুর রহমানকে মারধর করেন।

 

যুবদলের পক্ষ থেকে তালাক দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়েছে, ওই নারী ফেসবুকে জয় বাংলা স্লোগান দেন। তাই তার স্বামীকে সতর্ক করা হচ্ছিল। তখনই দু’একজন দু’চারটা কিল-ঘুষি মেরে দিয়েছেন। বিষয়টি স্থানীয় ভাবেই মীমাংসা করে নেয়া হয়েছে।

 

মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি হেঁটে যাচ্ছিলাম। তখন আমাকে দেখে ওরা বলছে যে, ‘স্ত্রীর কামাই খায়’। আমি এর প্রতিবাদ করলে তারা বলে ‘তুই যদি তোর বউকে না ছেড়ে দিস, এখান থেকে না পাঠাস, তাহলে খবর আছে।’ কেন ছাড়ব প্রশ্ন তুললে তারা আমাকে গালি দেয় এবং মারধর শুরু করে।’

 

আরও পড়ুন: রাজশাহীতে সাবেক এমপি আসাদের প্রিজন ভ্যানে হামলা

 

মারধরে হাত, মাথা, কান ও কপালে আঘাত পেয়েছেন বলে দেখান মিজানুর।

 

মিজানুরের স্ত্রী বীনা মজুমদার বলেন, ‘কিছু দিন আগে ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে ফেসবুকে একটি পোস্ট করি। সেখানে জয় বাংলা লিখি। এ জন্য সনি আমাকে ফোন করে বলে, এসব লেখা যাবে না। তা না হলে খুব খারাপ হবে। আমি বলি, ‘দল যখন ক্ষমতায় ছিল আমি তো খারাপ কারও সঙ্গে কিছু করিনি। এরপরও যদি আমার খারাপ হয় তাহলে হবে।’ তারপর ফোন রেখে দেয়।’

 

পরে আমার স্বামীকে রাস্তায় পেয়ে তারা বলে, ‘তোর বউ আওয়ামী লীগ করে, তুই তোর বউয়ের কামায় খাস। তুই তোর বউকে ছেড়ে দিবি।’ আমার স্বামী কোনো দল করে না। তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে তারা মারধর করে।’ 

 

বীনা বলেন, ‘এখনও কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় আসেনি। দল ক্ষমতায় থাকলেও আমি কোনো অন্যায় করিনি। আমার সাথে এমন হবে কেন? আমার দোষ একটাই আমি আওয়ামী লীগ করি। এ জন্য আমার স্বামীকে চাপ দিচ্ছে যেন আমাকে ছেড়ে দেয়। এটা কেমন কথা? দলের সঙ্গে সংসারের কি সম্পর্ক? যারা অন্যায় করেছে তারা শাস্তি পাবে। যাদের জন্য আওয়ামী লীগের এই অধঃপতন, তাদের বিচার হোক। যারা অন্যায় করেনি তাদের কেন হেনস্তা? আমরা নিরাপত্তা চাই।’

 

আরও পড়ুন: রাজশাহীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক যুবদল নেতা মো. সনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পক্ষে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বীনা মজুমদার বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছেন। এ জন্য তার স্বামীকে বলছিলাম। তখনই কয়েকটা ছেলে দু’একটা কিল-ঘুষি মেরে দিয়েছে। এটা আমরা মীমাংসা করে ফেলেছি। তার স্ত্রীকে তালাক দেয়ার জন্য চাপ দেয়ার বিষয়টি সত্য নয়।’

 

নগরের চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, ‘সন্ধ্যায় ঝামেলার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। স্থানীয় লোকজনই এটা মীমাংসা করে নিয়েছেন। তাই পুলিশ ফিরে এসেছে। এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করলে তদন্ত করে দেখা হবে।’

 

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন