বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে স্বাক্ষরিত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রভাব আমরা পর্যালোচনা করবো।
বিবৃতিতে বলা হয়,
আমরা সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের খবর দেখেছি। এ ধরনের একটি উদ্যোগের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল, যা দুই দেশের দীর্ঘদিনের একটি অনানুষ্ঠানিক সমঝোতাকে এখন আনুষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। আমরা জাতীয় নিরাপত্তা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব খতিয়ে দেখব। জাতীয় স্বার্থ রক্ষা ও সর্বস্তরে সমন্বিত জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই ভারত সরকারের অঙ্গীকার।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তি সৌদির
সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) প্রতিবেদন মতে, গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তান ও সৌদি আরবের চুক্তি বিষয়ে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, ‘এই চুক্তিটি উভয় দেশের নিরাপত্তা জোরদার এবং অঞ্চল ও বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জনের জন্য তাদের অভিন্ন অঙ্গীকারের প্রতিফলন। এর লক্ষ্য হলো দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো এবং যে কোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ গড়ে তোলা।’
চুক্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘কোনো একটি দেশের ওপর যে কোনো আগ্রাসনকে উভয় দেশের ওপর আগ্রাসন হিসেবে গণ্য করা হবে।’ আরও বলা হয়েছে, এই প্রতিরক্ষা চুক্তিটি দুই দেশের মধ্যে ‘ঐতিহাসিক অংশীদারিত্ব’ এবং ‘অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থ ও ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার’ ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বকে এখনই ইসরাইলকে থামাতে হবে: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বুধবার রিয়াদে সৌদি প্রধানমন্ত্রী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।’ এসপিএ জানিয়েছে। তারা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু, অভিন্ন স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় এবং নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অর্জনের লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়েও মতবিনিময় করেন।
চুক্তি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এক ঊর্ধ্বতন সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘এই চুক্তিটি বহু বছরের আলোচনার ফল। এটি নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয়, বরং আমাদের দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের গভীর সহযোগিতাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া।’ পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি একটি বিস্তৃত প্রতিরক্ষামূলক চুক্তি, যা সব সামরিক কৌশলকে অন্তর্ভুক্ত করে।
দোহায় ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলা এবং এরপর আরব-ইসলামি দেশগুলোর জরুরি সম্মেলনে হামলার নিন্দা জানানোর প্রেক্ষিতে পাকিস্তান-সৌদি নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো। এ কারণে চুক্তিটিকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।