সম্প্রতি টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সোনালি। কঠিন সংগ্রামের সময়ের নানা অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন তিনি।
ক্যানসার ধরা পড়ার খবর পেয়ে আর পাঁচজনের মতোই ভেঙে পড়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই সময় যে অবস্থার মধ্যে দিয়ে গেছেন সেই প্রসঙ্গে কথা বলেছেন সোনালি।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমি কিছুদিনের জন্য অসুস্থ বোধ করছিলাম, তারপর চেকআপ করাতে গেলে চিকিৎসক কয়েকটা পরীক্ষা করার কথা জানান। সেখান থেকেই জানতে পারি, এই রোগ আমার শরীরে বাসা বেঁধেছে।’
সোনালি বলেন, চিকিৎসকের মুখে প্রথম ‘ক্যানসার’ শব্দটা শুনে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। তারপর আমার স্বামী দুই দিনের মধ্যে আমাকে মেমোরিয়াল স্লোন কেটারিং এ নিয়ে গিয়েছিলেন।
অভিনেত্রী বলেন, ‘বারবার মনে হচ্ছিল আমার সঙ্গে এটা কীভাবে ঘটতে পারে? আমি সবসময় একটা স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করে এসেছি। পুষ্টিকর খাবার খেয়েছি, ব্যায়াম করেছি তারপরও কীভাবে হয়? শিগগির বুঝতে পারলাম, এটা নিয়ে এত ভাবা ঠিক হচ্ছে না। পরিবর্তে আমি কীভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে পারি সেদিকে মনোনিবেশ করা উচিত। আমার এই কঠিন সময়ে প্রিয়জনদের পাশে পেয়েছিলাম। যে কারণে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। এই ভাবানাটাই আমাকে সেই সময় সাহস যুগিয়ে ছিল।’
তার কথায়, ‘যে মুহূর্ত থেকে আমি 'ক্যানসার' শব্দটা শুনেছিলাম, আমি জানতাম যে আমি কী নিয়ে কাজ করছি তা আমাকে পুরোপুরি বুঝতে হবে। আমি শুধু বসে থাকতে চাইনি, যা কিছু এরপর আমার সঙ্গে হবে তা ঘটতে দিতে চাইনি। আমি আমার রোগ নির্ণয়, কীভাবে চিকিৎসা হবে সে সম্পর্কে যতটা সম্ভব নিজে জেনে বুঝে নিতে চেয়েছিলাম।’
বাড়ির লোকের পাশাপাশি অভিনেত্রী নিজেও তার চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি নিজেকে সবসময় মানসিক ভাবেও সুস্থ রাখতে চেষ্টা করতেন।
তার মতে, ‘আমি বিশ্বাস করি ক্যানসারের চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিকভাবে সুস্থ থাকারও প্রয়োজন রয়েছে। মানসিকভাবে শক্তিশালী হলে এবং একটি ইতিবাচক মানসিকতা বজায় রাখলেই আমার মতে অর্ধেক যুদ্ধ জিতে যাওয়া যায়।’
ছেলেকে রোগের বিষয়ে জানানো প্রসঙ্গে সোনালি বলেন, ‘আমার ছেলে রণবীর সুইজারল্যান্ডে একটি স্কুল ট্রিপে ছিল, যখন আমি আমার ক্যানসার সম্পর্কে জানতে পারি। সে সময় ওর বয়স ছিল ১৩ বছর। তখন তাকে মিথ্যে বলার পরিবর্তে, আমি এবং আমার স্বামী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে সম্পূর্ণ সত্য বলবো। আমরা সবসময় ওকে যা সত্যি তাই বলে এসেছি। আমি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম, রণবীর যেন এই খবরটা আমাদের থেকেই পায়, অন্য কারোর কাছ থেকে নয়।’
সোনালির মতে, ‘তবে ছেলেকে আমার রোগের ব্যাপারে বলাটা সবচেয়ে কঠিন ছিল। কারণ আমি ওকে সত্যি যেমন বলেছিলাম কঠোর হয়ে, তেমনই আশ্বস্ত করেছিলাম যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।’
অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘ক্যানসার নিয়ে ছেলের সব প্রশ্নের উত্তর আমি দিয়েছিলাম। এই চিকিৎসায় রণবীর আমাকে অনেক শক্তি জুগিয়েছিল। ও যে আমার পাশে এইভাবে থাকবে তা আমি সত্যি আশা করিনি।’
আরও পড়ুন: মা হওয়ার তিন মাস পর প্রকাশ্যে দীপিকা
উল্লেখ্য, ‘ষ্টার ডাষ্ট ট্যালেন্ট সাৰ্চ’ এ নিৰ্বাচিত হবার আগে সোনালি বেন্দ্ৰে একজন মডেল হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। তারপর তিনি মুম্বাই এ আমন্ত্ৰিত হয়ে যান। সেখানে তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্ৰ উদ্যোক্তা ও অভিনয় শিল্পীদের কাছে প্ৰশিক্ষণ লাভ করেন। ১৯৯৪ সালে ‘আগ’ ছবিতে গোবিন্দর বিপরীতে অভিনয় করে রুপালি জগতে পা রাখেন।
আরও পড়ুন: নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সায়রা বানু
]]>