সংবাদ সম্মেলনে চাঁদাবাজি ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির দায়ে তিন আওয়ামী লীগ নেতাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতির ঘোষণা দেন জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে জেলা শহরের মহানন্দা বাসস্ট্যান্ড মোড়স্থ জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই সোনামসজিদ স্থলবন্দর থেকে ছেড়ে আসা পণ্যবাহী ট্রাক থেকে টার্মিনালে জোরপূর্বক দাঁড় করিয়ে অবৈধভাবে গাড়ি প্রতি ১৬০ টাকা থেকে ২২০ টাকা করে চাঁদা তোলা হচ্ছিল। পতিত সরকারের কয়েকজন নেতাকে এই অবৈধ কাজের নেতৃত্ব দিচ্ছিলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ সড়কে চাঁদাবাজির বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে কৃষকলীগ নেতা আব্দুস সামাদ বকুল, শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া এবং দুর্লভপুর ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা আব্দুর রাকিব রাজুকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আ.লীগ নেতার দাপটে তারা শ্রমিক-মালিক সংগঠনের নাম করে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি করে আসছিল।’
জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন বলেন, ‘পতিত সরকারের পতনের পরেও কিছু নামধারী আ.লীগ নেতারা ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকে অবৈধভাবে চাঁদা তোলা অব্যাহত রেখেছে।’
আরও পড়ুন: কিট সংকটে বন্ধ করোনার পরীক্ষা, চালু হবে রোববার থেকে
সোনামসজিদ স্থলবন্দর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি একরামুল হকের নেতৃত্ব কথিত শ্রমিক নেতা সহবুল, জাহাঙ্গীর, শাহ আলম, আইনালসহ আরও বেশকিছু কথিত শ্রমিক নেতা চাঁদাবাজি করে আসছে। অথচ জেলা জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপ, জেলা ট্রান্সপোর্ট গ্রুপ এবং ট্রাক ট্যাংকলরি ও ক্যাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘চাঁদাবাজি ও স্থলবন্দরে নৈরাজ্যের কারণে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে আগামী শুক্রবার (২০ জুন) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রাক বন্ধের ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। পরে এনিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতারা মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করে ধর্মঘটের কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতারা সমাধানের আশ্বাস দিলে আম মৌসুমের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি।’
এনিয়ে সোনামসজিদ স্থলবন্দর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি একরামুল হক অভিযোগ অস্বীকার করেন।
মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘শিবগঞ্জ স্থানীয় একটি শ্রমিক গ্রুপ ট্রাক টার্মিনালে গাড়ি রাখতে চাই না। অন্যদিকে, জেলা শ্রমিক-মালিক গ্রুপ চাঁদা নিতে চায়। এনিয়ে তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। আমরা পণ্য আমদানির সঙ্গে সম্পৃক্ত। পরিবহন সংশ্লিষ্ট বিষয় বা চাঁদা নিয়ে আমাদের কোনো কর্মকাণ্ড নেই।’
এবিষয়ে কথা বলতে শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়ার একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ট্রাক মলিক গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহিদ আহম্মেদ, জেলা ট্রাক ট্যাংকলরী ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম আনার, জেলা ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল প্রমুখ।