সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্য সেজে অনলাইনে প্রতারণা: মূলহোতা গ্রেফতার

২ সপ্তাহ আগে
সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্য সেজে অনলাইনে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া একটি প্রতারক চক্রের মূলহোতাকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৩।

র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, বাদীর দায়েরকৃত মামলার ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাত ১টা ৩০ মিনিটে রংপুর জেলার পীরগাছা থানাধীন অভিরাম গ্রাম এলাকায় অভিযান চালায় র‌্যাব-১৩, সিপিএসসি রংপুর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল। অভিযানে প্রতারণা চক্রের মূলহোতা মো. নাজমুল হাসান ওরফে জিম (২৪)-কে গ্রেফতার করা হয়। তিনি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অভিরাম (নামা দোলা) গ্রামের মো. সাজ্জাদ হোসেন ওরফে জাহিদুল ইসলামের ছেলে।

 

বাদীর দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রেফতারকৃত আসামি ও তার সহযোগীরা সেনাবাহিনীর সৈনিক পরিচয় দিয়ে এক ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করে রাজশাহীতে ১০ কাঠা জমির শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব দেন। তারা দাবি করেন, জমির একটি অংশ একজন “মহিলা সৈনিকের” নামে এবং ওই নারী সৈনিকের কিছু টাকা পরিশোধ বাকি আছে। এভাবে প্রলোভন দেখিয়ে তারা বাদীর কাছ থেকে ধাপে ধাপে মোট ১৭ লাখ ২৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

 

পরবর্তীতে তারা সামরিক বাহিনীর ইউনিফর্ম পরে ভিডিও কলে বাদীর সঙ্গে কথা বলে আস্থা অর্জন করে এবং জমি বিক্রির অজুহাতে আরও ৫ লাখ টাকা দাবি করে। এতে সন্দেহ হলে বাদী অনুসন্ধান করে জানতে পারেন, তারা আসলে কোনো বাহিনীর সদস্য নন, বরং একটি প্রতারক চক্রের সদস্য।

 

এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর থানায় মামলা নং–০৩/১৭৭, তারিখ–০৭/১১/২০২৫, ধারা ১৭০/১৭১/৪০৬/৪১৮/৪২০/৫০৬/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়।

 

আরও পড়ুন: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ সদস্যের নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন

 

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাজমুল হাসান স্বীকার করেছে যে, সে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্য পরিচয়ে অনলাইনে প্রতারণা করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। মাঝে মাঝে সে নারী সেনা সদস্য পরিচয়ে নারীর বেশ ধারণ করে ও নারীর কণ্ঠে কথা বলে ভিডিও কলের মাধ্যমে প্রতারণা চালাত এবং পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে অর্থ আদায় করত।

 

অভিযানকালে তার হেফাজত থেকে সেনা ও নৌবাহিনীর বিভিন্ন পোশাক ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে—

 

  • সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম ১টি, কমব্যাট ড্রেস ১টি, কমব্যাট গেঞ্জি ১টি, ফিল্ড ক্যাপ ১টি, ট্রাউজার ১টি, টাওয়াল ১টি।
  • নৌবাহিনীর সাদা ড্রেস ১টি, কমব্যাট গেঞ্জি ২টি, নেভি জার্সি ক্যাপ ১টি, টাওয়াল ১টি।
  • বিভিন্ন বাহিনীর ক্যান্টিন গেঞ্জি ১৫টি, ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ৯টি, বাটন মোবাইল ৫টি, স্মার্টফোন ১টি, নারীর পরচুলা ১ গোছা এবং মেকআপ সেট।

 

গ্রেফতার আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

র‌্যাব-১৩ জানায়, অনলাইনে এ ধরনের প্রতারণা চক্রের বিরুদ্ধে তাদের গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত থাকবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন