সুন্দরবন থেকে ছয় বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় জলদস্যুরা

৩ সপ্তাহ আগে
সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে বাংলাদেশি ছয় জেলেকে অপহরণ করেছে ভারতীয় জলদস্যু।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মামুন্দো নদীর মারডাঙ্গা খাল ও মামুন্দো এবং বৈকেরি নদীর সংযোগস্থল হরিণটানা খাল থেকে তাদের অপহরণ করা হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

 

অপহৃতদের মধ্যে রাশিদুল ইসলাম (৩৫) ও আতাউর রহমান (৩২) এর বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগরে। রাশিদুল কালিঞ্চি গ্রামের মান্নান বরকন্দাজের ছেলে এবং আতাউর টেংরাখালী গ্রামের সামছুর রহমানের ছেলে। অপর চার জেলের নাম জানা যায়নি।


বিষয়টি নিশ্চিত করেছে অপহরণ করা নৌকার মালিক কালিঞ্চি গ্রামের মমতাজ ভাঙি ও মোশারফ হোসেন।


বাংলাদেশি জেলেদের অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে মিলে গ্রামবাসী সীমান্তবর্তী নদীতে অবস্থানরত দস্যুদের উদ্দেশ্যে রওনা হলেও বিজিবির মধ্যস্থতায় ফিরে আসে।


জলদস্যুর খপ্পরে পড়েও বেঁচে ফেরা জেলেরা জানান, তাদের সঙ্গীদের উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া জলদস্যুরা ভারতীয়। নয় সদস্যের ডাকাত দলটি চারটি আগ্নেয়াস্ত্র ও একটি ভারতীয় নৌযান নিয়ে তাদের অপহরণ করে। সকালের দিকে দু’জনকে মাছের নৌকা থেকে তুলে নেয়ার পর দুপুরে চারটি পৃথক নৌকা থেকে আরও চারজনকে দস্যুরা মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করে বলে তাদের দাবি।


টেংরাখালী গ্রামের নুরুল হক জানান, দু’দিন আগে বনবিভাগের পাশ নিয়ে তারা তিনজন বনে যান। বুধবার বেলা ১১টার দিকে ভারতীয় বড় একটি বোট নিয়ে এসে জলদস্যুরা তাদের অপহরণের চেষ্টা চালায়। এসময় তারা তিনজন নৌকা ছেড়ে বনের মধ্যে উঠে গেলে দস্যুরা শুধু নৌকা নিয়ে চলে যায়।

 

আরও পড়ুন: সাগরের মোহনা থেকে ট্রলারসহ জলদস্যু আটক


এর আগে বুধবার সকালে রাশিদুল ও আতাউরকে অপহরণের কথা জানান টেংরাখালী গ্রামের জেলে ওয়েজকুরুনি। তারা জাল ফেলে মারঢাঙ্গা খালে মাছ ধরছিল। এসময় নয় সদস্যের জলদস্যু দল সেখানে পৌঁছে দুই নৌকা থেকে তাদেরকে উঠিয়ে নিলেও অপর তিনটি নৌকায় অবস্থানরত জেলেরা বনের মধ্যে উঠে যায়। দস্যুরা জিম্মি দুই জেলের জন্য এখনো পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট অংকের মুক্তিপণ দাবি করেনি বলেও তিনি জানান।


একইভাবে দুপুরের দিকে বৈকেরির হরিণটানা খাল থেকে এক জেলেসহ আরও তিনজনকে একই জলদস্যুরা অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে জানান কালিঞ্চি গ্রামের মোশারফ হোসেন। তার দাবি, নৌকা থেকে জেলে উঠিয়ে নেয়ার পর তিনি লোকালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। তার দাবি জলদস্যু দলটি নিজেদের ভারতের কাজল-মুন্না বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছে। এরইমধ্যে জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া জেলেদের মাধ্যমে তারা নিশ্চিত হয়েছে, এসব জলদস্যু ভারতীয়। সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া তাদের তিন সহযোগী মুক্তিপণের টাকা ভারতে পাঠানোর কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।


শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, দুই সপ্তাহ আগে যশোরের বিভিন্ন এলাকা থেকে একই জলদস্যু বাহিনীর তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার একইভাবে আরও কয়েকজন জেলের অপহরণের খবর পেয়ে অপহৃত জেলের পরিবারসহ গ্রামবাসীদের ডাকে সাড়া দিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে, আবার ফিরে এসেছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন