সিলেটে ২৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বর্ডার ড্রাইভ’ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ

৩ সপ্তাহ আগে
সিলেট জেলার প্রায় সব পর্যটনকেন্দ্রই সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত। কিন্তু অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও লিংক রোড না থাকায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পর্যটকদের পোহাতে হচ্ছে মারাত্মক ভোগান্তি। এতে সময় ও ব্যয় দুটোই বাড়ছে। যোগাযোগ সমস্যার কারণে অনেক সম্ভাবনাময় পর্যটনস্পট পর্যটকদের নাগালের বাইরে থেকে যাচ্ছে, ফলে পিছিয়ে পড়ছে সিলেটের পর্যটন খাত।

২০২৩ সালের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে সিলেটের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মুজিবুর রহমান এ সমস্যা তুলে ধরে ‘সিলেট–জাফলং–সাদাপাথর–ওসমানী বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের’ প্রস্তাব করেন। এতে পর্যটনখাতে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে বলেও মত দেন তিনি। ওই সম্মেলনে প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়।

 

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত রুটের মধ্যে ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সাদাপাথর পর্যন্ত যোগাযোগব্যবস্থা তুলনামূলক ভালো এবং এ পথ ব্যবহারযোগ্য বঙ্গবন্ধু মহাসড়ক দিয়েই। একইভাবে সিলেট শহর থেকে জাফলং পর্যন্তও রয়েছে উন্নত সড়ক সংযোগ। তবে জাফলং থেকে সাদাপাথর পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ ও পুরোনো সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ করলেই পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে সওজ।

 

ভারত সীমান্ত ঘেঁষে এ সড়কটি নির্মিত হলে পর্যটকরা সীমান্তের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। কক্সবাজারের ‘মেরিন ড্রাইভ’ আদলে সিলেটে গড়ে উঠবে ‘বর্ডার ড্রাইভ’।

 

আরও পড়ুন: ৩ সপ্তাহ পর সচিব পেল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

 

সওজ সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮০০ কোটি টাকা এবং এর সম্ভাব্যতা যাচাই কাজ বর্তমানে চলমান। আসন্ন জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে।

 

প্রস্তাবিত ‘বর্ডার ড্রাইভ’ সড়ক নির্মিত হলে পর্যটকরা মাত্র দুই দিনেই সিলেটের ২৩টি জনপ্রিয় স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন। এর মধ্যে রয়েছে—হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরাণ (রহ.) মাজার, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, লাক্কাতুড়া চা বাগান, বাইশটিলা, খাদিম রিসোর্ট, সাদাপাথর, বিছানাকান্দি, উতমাছড়া, দমদমছড়া, লক্ষণছড়া, পান্থুমাই, খাসিকম, জাফলং, তামাবিল, নলিউরি ফলস, ডিবিরহাওর, জৈন্তাপুর, লালাখাল ও রাতারগুলসহ আরও অনেক দর্শনীয় স্থান। বর্তমানে একদিনে দুই–তিনটির বেশি পর্যটনকেন্দ্র ঘোরা সম্ভব হয় না।

 

সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমীর হোসেন বলেন, প্রকল্পটির সর্বশেষ অবস্থা আগামী জেলা প্রশাসক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে। সীমান্তের সৌন্দর্য সামনে রেখে এবং বসতবাড়ি পেছনে রেখে সড়কটি নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে যেতে যেতে পর্যটকরা সীমান্তের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। এজন্যই সড়কটির নাম রাখা হয়েছে ‘বর্ডার ড্রাইভ’। এটি বাস্তবায়িত হলে সিলেটের পর্যটনের বিকাশ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন