সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে তারা নানা কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। বুধবার (৩০ এপ্রিল) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন প্রবাসী সুয়েব আহমদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুয়েব আহমদ বলেন, ‘শাহপরাণ থানার অন্তর্গত খিদিরপুর মৌজার রুস্তমপুর গ্রামে জে এল নং ৬০, বিএস খতিয়ান নং ১২৯৪, ১৮৩, ৭৫৮, ১৫৮৬ বিএস দাগ নং ৫৪৬, ৫৫২ ও ৫৫৫-এ মোট ৫৫ শতক ভূমির খরিদা মালিক তিনি। ওই ভূমি থেকে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী জাহিরা বেগমের কাবিননামায় ১৫ শতক এবং মোহরানার টাকার পরিবর্তে তার স্ত্রী রহিমা বেগমকে সাড়ে ১৮ শতক ভূমি রেজিস্ট্রি করে দেন। পরবর্তীতে জাহিরা বেগমের টাকার প্রয়োজনে কাবিনের ওই ভূমিটুকু পুনরায় তার কাছে বিক্রি করে দেন। এছাড়া একই মৌজায় ২২ শতক ভূমি তার বড় ভাই রফি আহমদ নোমান ও ভগ্নিপতি আব্দুল ওয়াহিদ তার কাছে বিক্রি করেছেন।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় সারজিসের উপস্থিতিতে এনসিপির সমাবেশে মারামারি, ছুরিকাঘাতের অভিযোগ
সুয়েব আহমদ জানান, তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করায় সরল বিশ্বাসে ওই ভূমি দেখাশোনার জন্য বড় ভাই রফি আহমদ নোমানকে আমমোক্তার নিয়োগ করেন। পরে এই ভূমি নামজারি করার জন্য বড় ভাই রফি আহমদকে তাগিদ দিলেও তিনি নামজারি না করায় তার সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে তিনি বাধ্য হয়ে ২০২৩ সালের ২৪ মে দেশে এসে আমমোক্তারনামা বাতিল করে যুক্তরাজ্যে ফিরে যান। সম্প্রতি দেশে এসে ভূমির খাজনা পরিশোধ ও কিছু ভূমির নামজারি করার উদ্দেশ্যে সিলেট সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দেখতে পান, ক্রয়কৃত ভূমি তার বড় ভাই জাল কাগজের মাধ্যমে মেয়ের জামাই অ্যাডভোকেট ফরহাদ আহমদের নামে নামজারী করিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণামূলকভাবে তারা রেজিস্টার্ড সাফ কবলা দলিল বানিয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে স্বত্ব মোকদ্দমা দায়ের করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত উক্ত ভূমিতে স্থিতাবস্থা জারি করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, তার ভাই ও ভাইয়ের মেয়ের জামাই আদালতের আদেশ অমান্য করে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এই ভূমি দখলের উদ্দেশ্যে অন্তত ৫ বার চেষ্টা চালিয়েছে। শাহপরাণ থানার এসআই খুরশেদ ও দুজন বহিরাগত ভাড়াটিয়া নারীকে সঙ্গে নিয়ে নির্মিত ঘর দখলের পাঁয়তারা চালিয়েছে। তিনি এসব বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেছেন। তাদের পরামর্শে তিনি কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরিসহ লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। শাহপরাণ থানায়ও আরেকটি সাধারণ ডায়েরি করেন। শাহরাণ থানার এসআই খুরশেদ প্রভাবিত হয়ে আসামি পক্ষকে সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: এয়ার টিকিট সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আটাবের প্রতিবাদ
সুয়েব আহমদ বলেন, ‘ইতিমধ্যে ভূমির রেকর্ড সংশোধনের জন্য তিনি সিলেট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে নামজারি মোকদ্দমা দায়ের করেছেন। সুয়েব আহমদ অভিযোগ করেন তাকে হয়রানির উদ্দেশ্যে গত ২০ ফেব্রুয়ারি কোতোয়ালি মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে বড় ভাই রফি আহমদ মিথ্যা ও কাল্পনিক অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় তিনি জায়গার মূল্য বাবদ ৭৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা আমাকে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। যা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ওই তারিখে আমার ব্যাংক একাউন্টে এমন কোনো লেনদেন হয়নি, কিংবা নগদ কোনো টাকাও তিনি আমাকে দেননি।’
রফি আহমদ নোমান এবং অ্যাডভোকেট ফরহাদ আহমদ মামলা তুলে নিতে তাকে হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। একইসঙ্গে তাকে একাধিক মামলায় আসামি করারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় জানমালের নিরাপত্তায় তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।