সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা বাংলাদেশের

৩ সপ্তাহ আগে
সিরিয়ায় চলমান রাজনৈতিক সংকটের সুযোগ নিয়ে দেশটিতে ইসরাইল যে আগ্রাসন শুরু করেছে তার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার সিরিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বাংলাদেশ এ সংকটপূর্ণ সময়ে সিরিয়ার জনগণ এবং তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানায়। 

 

একই সঙ্গে সেদেশে শান্তি বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশ সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানায়। বাংলাদেশ সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারসহ সব অংশীজনকে সংযম দেখানো, সিরীয়দের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান জানানো এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আহ্বান জানায়।

 

বিবৃতিতে আরও উ‌ল্লেখ করা হয়, সিরিয়ায় আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের বিষয়ে বাংলাদেশ তার অবস্থান পুনরায় ঘোষণা করেছে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ দ্ব্যর্থহীনভাবে এই সংকটপূর্ণ উত্তরণের মুহূর্তে ইসরাইলের অবৈধ আগ্রাসনের নিন্দা জানায়।

 

আরও পড়ুন: সিরিয়ায় সামরিক প্রশিক্ষণ দিতে প্রস্তুত তুরস্ক

 

বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, অগ্রগতিগুলো সিরিয়ার জনগণের জন্য অন্তর্ভুক্তি, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার নীতিতে তাদের জাতি পুনর্গঠনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ উপস্থাপন করে।

 

বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে, বিশেষ করে জাতিসংঘকে সিরিয়ার বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষা, মানবিক নীতি সমুন্নত রাখা এবং নিরাপত্তা পরিষদের রেজ্যুলুশন ২২৫৪-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা জোরদারের আহ্বান জানায়।

 

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সিরিয়ার জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে দেশটির জাতি গঠনের জন্য সব পক্ষকে প্রচেষ্টায় নিয়োজিত হওয়ার আহ্বান জানায় বাংলাদেশ। এই অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্র এবং টেকসই শান্তির পথ নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

 

গত সপ্তাহে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে দেশটির ওপর বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। খবরে বলা হয়েছে,  ইসরাইল গত ১২ ঘণ্টায় ৬০টিরও বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে সিরিয়ায়। আসাদের পতনের পর থেকে হামলার সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়েছে।

 

আরও পড়ুন: ইসরাইলের অব্যাহত হামলা নিয়ে কী বললেন সিরিয়ার বিদ্রোহী নেতা

 

বাশার আল-আসাদের সামরিক বাহিনীর ঘাঁটি, কয়েক ডজন যুদ্ধবিমান, ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, উৎপাদন ক্ষেত্র, ওয়্যারহাউস এবং ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলি হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল বলেও জানানো হয়।

 

শুধু তাই নয়, চুক্তি লঙ্ঘন করে সিরিয়ার অধিকৃত গোলান মালভূমির অনেক এলাকা দখল নিতে শুরু করেছে ইসরাইল। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু জানান, সিরিয়ার প্রায় ৪০০ বর্গকিলোমিটার অসামরিক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে ইসরাইলি সেনারা।

 

১৯৬৭ সালে গোলান মালভূমির বেশিরভাগ অংশ দখল করে ইসরাইল এবং ১৯৮১ সালে বেআইনিভাবে এই অঞ্চলটি অধিগ্রহণ করে। ১৯৭৩ সালে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের পর সিরিয়া ও ইসরাইল অধিকৃত গোলান মালভূমিতে এই নিরাপদ অঞ্চলটি ঘোষণা করে জাতিসংঘ।

 

ইসরাইলি দখলের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কাতার, ইরাক এবং সৌদি আরব। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দোহা ইসরাইলের এই অনুপ্রবেশকে বিপজ্জনক উন্নয়ন এবং সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব ও সংহতির ওপর স্পষ্ট আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করে যা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

 

আরও পড়ুন: পালানোর আগে শেষ কয়েক ঘণ্টা কেমন কেটেছিল আসাদের?

 

ইসরাইলের সাম্প্রতিক ভূমি দখল জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিকও নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি ১৯৭৪ সালের ইসরাইল-সিরিয়া বিচ্ছিন্নতা চুক্তির লঙ্ঘন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন