তবে, শুধু সিরিয়ার রণক্ষেত্রেই নয় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুরস্ক তার সামরিক দক্ষতা দেখিয়েছে আজারবাইজান, লিবিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের দেশগুলোতে।
বিশ্বের অষ্টম শক্তিশালী সামরিক বাহিনী তুরস্কের
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার (জিএফপি) ইনডেক্স অনুযায়ী, তুরস্ক বিশ্বের শীর্ষ দশটি সামরিক শক্তির একটি। ২০২৪ সালের জিএফপি ইনডেক্স অনুযায়ী বিশ্বের ১৪৫টি দেশের মধ্যে সামরিক সক্ষমতায় তুরস্কের অবস্থান অষ্টম।
তুরস্ক বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য। ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সেনাসংখ্যার দিক থেকে তুরস্কের অবস্থান দ্বিতীয় বৃহত্তম। রিজার্ভ সদস্যসহ ৮ লাখ সেনা রয়েছে তুরস্কের সামরিক বাহিনীতে। পাশাপাশি দেশটির আধা সামরিক বাহিনীতে রয়েছে দেড় লাখ সেনা।
এছাড়া সামরিক সরঞ্জামের দিক থেকেও অনেকটাই এগিয়ে তুরস্কের সামরিক বাহিনী। ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্র হওয়ায় দেশটির সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ, কমান্ড কাঠামো এবং যুদ্ধ সরঞ্জামের সবই ন্যাটো স্ট্যান্ডার্ডের। বছরে প্রায় ৪৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার সামরিক খাতে ব্যয় করে থাকে দেশটি। মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিপুলহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তুরস্কের সামরিক বাজেট। এ ব্যাপার গ্লোবাল ডাটার সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী ২০২৯ সালের মধ্যে দেশটির সামরিক খাতে ব্যয় ৭৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২৪ এ সামরিক শক্তিতে শীর্ষে যেসব দেশ
রয়েছে নিজস্ব ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি
তুরস্কের রয়েছে নিজস্ব প্রতিরক্ষাশিল্প বা ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি। যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধজাহাজ, ট্যাংক, কামান, ড্রোন থেকে শুরু করে সব ধরনের ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং বৃহৎ আকারের যুদ্ধাস্ত্র উৎপাদন করে থাকে তুরস্কের প্রতিরক্ষা খাতের বিভিন্ন কোম্পানি। বর্তমানে যুদ্ধ সরঞ্জামের দিক থেকে তুরস্ক প্রায় স্বনির্ভর। নিজেদের চাহিদার বেশিরভাগ যুদ্ধাস্ত্র তুরস্কের মাটিতেই উৎপাদিত হয়।
এমনকি নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশেও যুদ্ধাস্ত্র রফতানি করে থাকে তুরস্ক। এর মাধ্যমে বিশ্বের অন্যতম সমরাস্ত্র রফতানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে দেশটি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে তুরস্কের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি। ২০২৩ সালে তুরস্কের সামরিক খাতের রফতানি দাঁড়িয়েছিলো ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪ সালে সাত বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করতে পারে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সূত্র।
বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ট্যাংক বহর তুরস্কের
তুরস্কের স্থল বাহিনীতে রয়েছে ৪ লাখ নিয়মিত সেনা। দেশটির রয়েছে বিশাল ট্যাংকবহর। প্রায় আড়াই হাজার ট্যাংক রয়েছে তুরস্কের সামরিক বাহিনীর ভান্ডারে; যা দেশটিকে পরিণত করেছে বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ বৃহত্তম ট্যাংকবহরের মালিক হিসেবে। তুরস্কের সামরিক বাহিনীতে রয়েছে জার্মানির তৈরি লিওপার্ড ১, লিওপার্ড ২ সহ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এম ৬০-এর মতো শত শত অত্যাধুনিক ট্যাংক। এছাড়া তুরস্কের বহরে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এম ৪৮-এর মতো পুরোনো ট্যাংকগুলোতেও ব্যাপকভাবে সংস্কারের মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘নতুন যুগের সূচনা’, সিরিয়াকে সহায়তায় প্রস্তুত তুরস্ক
এর পাশাপাশি সামরিক সরঞ্জাম ও যুদ্ধাস্ত্রের ক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর নির্ভরতা হ্রাস করতে সম্প্রতি নিজস্ব প্রযুক্তিতে আলতাই নামের একটি অত্যাধুনিক ট্যাংকও তৈরি করেছে তুরস্ক। আগামী দিনগুলোতে তুরস্কের সামরিক বাহিনীর ‘মেইন ব্যাটল ট্যাংক’ বা এমবিটি হিসেবে ব্যবহৃত হবে এই আলতাই ট্যাংক। ইতোমধ্যেই সামরিক বাহিনীর জন্য প্রায় ১ হাজার আলতাই ট্যাংক তৈরির অর্ডার দিয়েছে তুর্কি সরকার।
তুরস্কের সামরিক বাহিনীতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের দশ হাজারেরও বেশি আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) ও ইনফ্যান্ট্রি মোবিলিটি বা ফাইটিং ভেহিকল। যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এম১১৩ এপিসির পাশাপাশি রয়েছে তুরস্কের নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি অত্যাধুনিক এপিসি ও ফাইটিং ভেহিকল। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বিএমসি কিরপি এবং অটোকার কোবরা। অটোকার কোবরা তুরস্কের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যেও জনপ্রিয়।
বিশ্বের ২২টি দেশের সামরিক বাহিনী ব্যবহার করে এই অটোকার কোবরা এপিসি। যাদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও। ট্যাংক ও এপিসির পাশাপাশি তুরস্কের সামরিক বাহিনীতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ও বিভিন্ন মডেলের ত্রিশ হাজারেরও বেশি অক্সিলারি ভেহিকল। যার বেশিরভাগই নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি।
আরও পড়ুন: তুরস্কে এরদোয়ান সরকারের সমালোচনা করে ৯ জন কারাগারে
বিশ্বের মধ্যে অত্যাধুনিক আর্টিলারি সিস্টেম তুরস্কের। তুরস্কের সেনাবহরে রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার দূরপাল্লার কামান। এগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই অত্যাধুনিক সেলফ প্রোপেল্ড আর্টিলারি। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এম ৫২ ও এম ৪৪ সেল্ফ প্রোপেল্ড আর্টিলারির পাশাপাশি তুরস্কের সামরিক বাহিনীর ভান্ডারে রয়েছে দেশটির নিজস্ব তৈরি টি-১৫৫ ফিরটিনা সেল্ফ প্রোপেল্ড হাউৎজার এবং আরপান-১৫৫ ফাস্ট মুভিং হাউৎজার। অত্যাধুনিক ফিরটিনা কামানটি থেকে নির্ভুল নিশানায় প্রতি মিনিটে ৮টি গোলা নিক্ষেপ করা যায় সর্বোচ্চ ৪১ কিলোমিটার দূরত্বে।
অপরদিকে, আরপান-১৫৫ হাউৎজার থেকেও প্রতি মিনিটে নিক্ষেপ করা যায় ছয় থেকে আটটি গোলা। তবে ‘এইট বাই এইট’ চ্যাসিসের ওপর নির্মিত এই কামানটির বৈশিষ্ট হলো এর দ্রুতগামিতা। যুদ্ধক্ষেত্রে খুব দ্রুত নিজের স্থান পরিবর্তন করতে পারে এই কামান। ফলে একে শনাক্ত করে ধ্বংস করা শত্রুপক্ষের জন্য কষ্টসাধ্য।
আরও পড়ুন: নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা আইসিসির সাহসী পদক্ষেপ: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট
হাজার হাজার কামানের পাশাপাশি তুরস্কের সামরিক ভান্ডারে রয়েছে বিশ্বের অত্যাধুনিক রকেট লঞ্চার আর্টিলারির বিশাল ভান্ডার। প্রায় তিন শতাধিক এই রকেট লঞ্চারের বেশিরভাগই তুরস্কের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ১০৭ মি.মি সক্ষমতার টিআর-১০৭, ১২২ মি.মি সক্ষমতার টি-১২২সাকারিয়া এবং ৩০০ মি.মি সক্ষমতার টিআরজি-৩০০ কাসিরগা’র মতো হেভি রকেট লঞ্চার আর্টিলারি। কাসিরগা থেকে নিক্ষেপ করা প্রতিটি রকেট ম্যাক ৪.৮ গতিতে ১২০ কিলোমিটার দূরত্বের নিশানায় নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। সম্প্রতি তুরস্ক থেকে আমদানি করা টিআরজি-৩০০ কাসিরগা রকেট লঞ্চার সংযোজিত হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতেও।
শুধু আর্টিলারি কিংবা রকেট লঞ্চার আর্টিলারির পাশাপাশি তুরস্কের সামরিক বাহিনীর ভান্ডারে রয়েছে দুই শতাধিক এসআরবিএম বা স্বল্প পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল লঞ্চার। এগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অত্যাধুনিক এমজিএম ১৪০ এটিএসিএম ছাড়াও রয়েছে তুরস্কের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি জে-৬০০টি ইলদিরিম, বোরা ও তাইফুনের মতো অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল সিস্টেম। এর মধ্যে ইলদিরিম ক্ষেপণাস্ত্র নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে পারে ৩শ কিলোমিটার দূরত্বের নিশানায়।
তুরস্কের হাতে রয়েছে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
তুরস্কের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাও অত্যন্ত উন্নত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ এর মতো বিশ্বের সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যা প্রায় ৪শ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকার আকাশসীমা রাখে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। এছাড়া ১ হাজার কিলোমিটার দূরের বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্রকেও শনাক্ত করতে পারে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেমের রাডার ব্যবস্থা। এর পাশাপাশি নিজস্ব প্রযুক্তির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও গড়ে তুলেছে তুরস্ক, যার সক্ষমতা রয়েছে বিশ্বের খুব কম দেশেরই। এর মধ্যে রয়েছে হিসার এর মতো মধ্যম পাল্লার বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন: তুরস্কে সন্ত্রাসী হামলার দায় স্বীকার পিকেকের
নিজস্ব প্রযুক্তির রাডার ও ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম
এগুলোর পাশাপাশি তুরস্কের রয়েছে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি অত্যাধুনিক রাডার ও ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম। যা তুরস্কের জল, স্থল ও অন্তরীক্ষকে করেছে সুরক্ষিত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে আসেলসান আর্লি ওয়ার্নিং রাডার এবং এয়ার ডিফেন্স ও ফায়ার কন্ট্রোল রাডার। ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেমের মধ্যে রয়েছে তুরস্কের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি কোরাল ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম এবং হাভেলসান আর্লি ওয়ার্নিং টেকনোলজি রাডার সিস্টেম।
বিশ্বের ড্রোন সুপারপাওয়ার তুরস্ক
বিশ্বে সামরিক ড্রোন উদ্ভাবন ও উৎপাদনে অন্যতম অগ্রগামী দেশ তুরস্ক। পাশাপাশি ড্রোন রফতানির মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আয় করে থাকে দেশটি। নিজেদের সামরিক বাহিনীর চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ড্রোন রফতানি করে থাকে তুরস্ক। ড্রোন রফতানির আন্তর্জাতিক বাজারের ৬৫ শতাংশই দেশটির দখলে। পক্ষান্তরে চীনের দখলে ২৫ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মাত্র ৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: তুরস্কে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জড়িত একজনের পরিচয় শনাক্ত
ড্রোন রফতানির পাশাপাশি তুরস্কের সামরিক বাহিনীর হাতে রয়েছে বিশ্বের সর্বাধুনিক ড্রোন সিস্টেমের বিশাল বহর। ড্রোন ওয়ারফেয়ারে এমন সক্ষমতা রয়েছে বিশ্বের খুব কম দেশেরই। তুরস্কের তৈরি অত্যাধুনিক আনম্যানড কমবাট এরিয়াল ভেহিকল বা ড্রোনের মধ্যে রয়েছে বায়রাকতার টিবি২, বায়রাকতার আকিনসির মতো বিধ্বংসী মারণাস্ত্র। যুদ্ধক্ষেত্রে যার ব্যবহার মোর ঘুড়িয়েছে সিরিয়া, আজারবাইজান ও লিবিয়ার রণাঙ্গনে।
নিজস্ব অ্যাটাক হেলিকপ্টার তৈরি করে তুরস্ক
তুরস্কের স্থলবাহিনীর রয়েছে ৫ শতাধিক কমব্যাট ও ইউটিলিটি হেলিকপ্টারের বিশাল বহর। এগুলোর মধ্যে অন্যতম তুরস্কের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি টি ১২৯ অ্যাটাক হেলিকপ্টার। যা বিশ্বের সর্বাধুনিক হেলিকপ্টার গানশিপগুলোর মধ্যে অন্যতম। এছাড়া রয়েছে তুরস্কের নিজস্ব তৈর গোকবে ইউটিলিটি হেলিকপ্টার, ফ্রান্সের তৈরি ইউরোকপ্টার কুগার, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি সিকোরস্কি এস-৭০ ব্ল্যাকহক এবং বোয়িং চিনুক হেভিলিফট হেলিকপ্টার।
ন্যাটোর দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমান বহর তুরস্কের
স্থলবাহিনীর পাশাপাশি শক্তিশালী বিমানবাহিনীও রয়েছে তুরস্কের। ৫০ হাজার সদস্যের শক্তিশালী এই বাহিনীতে রয়েছে তিন শতাধিক বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধ বিমান, অর্ধশতাধিক হেলিকপ্টার এবং প্রায় অর্ধশতাধিক বিভিন্ন ধরনের ড্রোন। মহাকাশেও বিচরণ রয়েছে তুরস্কের বিমান বাহিনীর। রয়েছে নিজস্ব স্যাটেলাইট বহর। এয়ারক্রাফটের সংখ্যার দিক বিবেচনা করলে রাশিয়া বাদে ইউরোপের সবচেয়ে বড় বিমানবাহিনী তুরস্কের।
আরও পড়ুন: তুরস্কে বিমান কোম্পানির সদর দফতরে হামলায় নিহত ৪
পাশাপাশি বিশ্বের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ পাইলট আহমেদ আলি সেলিকটেন, বিশ্বের প্রথম নারী ফাইটার বিমান পাইলট সাবিহা গোকেনও তুরস্কের বিমানবাহিনীর সদস্য ছিলেন। তুরস্কের বিমানবাহিনীতে রয়েছে আড়াই শতাধিক যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। এছাড়া রয়েছে এফ-৪ ফ্যান্টম বোমারু বিমান। পাশাপাশি ইউরোকপ্টার কুগার, বেল, সিকোরোস্কি ব্ল্যাক হক এবং তুরস্কের নিজস্ব উৎপাদিত গোকবে হেলিকপ্টারও রয়েছে তুরস্কের বিমানবাহিনীতে। এছাড়া বিমানবাহিনীর ড্রোন বহরে রয়েছে আঙ্কা, আকসুঙ্গার এবং আকিনসির মতো অত্যাধুনিক ড্রোনের বিশাল সংগ্রহ।
সাবমেরিনসহ যুদ্ধজাহাজ উৎপাদন করে তুরস্ক
ভূমধ্যসাগর ও কৃষ্ণসাগর অঞ্চলের নৌপরাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হয় তুরস্কের নৌবাহিনী। বিশ্বের দুই গুরুত্বপূর্ণ এই সমুদ্রে নিজেদের প্রভাব বজায় রাখার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক নৌ চলাচল রুটগুলোতে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তুলেছে তুরস্ক। দেশটির নৌবাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় অর্ধলক্ষাধিক। ড্রোন উড্ডয়নে সক্ষম বিশালআকৃতির অ্যামফিবিয়াস অ্যাসল্ট শিপের পাশাপাশি তুরস্কের নৌবহরে রয়েছে অত্যাধুনিক ফ্রিগেট ও করভেটের বিশাল বহর।
আরও পড়ুন: আঙ্কারায় হামাস নেতাদের সাথে তুর্কি গোয়েন্দা প্রধানের বৈঠক
বিশেষ করে তুরস্কের রয়েছে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সেরা সাবমেরিন বহর। মোট ১৩টি অত্যাধুনিক ডিজেল ইলেক্ট্রিক সাবমেরিন রয়েছে তুরস্কের নৌবাহিনীতে যেগুলোর মধ্যে রয়েছে আতিলে, প্রিভেজ এবং গুর ক্লাসের সাবমেরিন। যেকোনো ধরনের যুদ্ধজাহাজ থেকে শুরু করে এমনকি সাবমেরিন পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে উৎপাদন করতে সক্ষম যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যেই নিজস্ব প্রযুক্তিতে উৎপাদিত অত্যাধুনিক রেইস ক্লাসের সাবমেরিন যুক্ত হয়েছে তুরস্কের সাবমেরিন বহরে।
যুক্ত হচ্ছে নিজস্ব প্রযুক্তির বিমানবাহী রণতরী
সাবমেরিনের পাশাপাশি তুরস্কের নৌবহরে রয়েছে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি টিসিজি আনাদুলু নামের ২৮ হাজার টনের সুবিশাল অ্যামফিবিয়াস অ্যাসল্ট শিপ। যেখানে উড্ডয়ন এবং অবতরণ করতে পারে মানববিহীন এয়ারক্রাফট বা ড্রোন। এছাড়া তুরস্কের নৌবাহিনীতে রয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত ১৭টি ফ্রিগেট, দশটি করভেট এবং বিভিন্ন আকৃতি ও সক্ষমতা সম্বলিত অর্ধশতাধিক অফশোর পেট্রোল ভেসেল, ফাস্ট অ্যাটাক ক্রাফট এবং কোস্টাল পেট্রোল বোটের সুবিশাল বহর। ট্যাংকার, মাইন সুইপার, অক্সিলারি শিপ সহ সব মিলিয়ে তুরস্কের নৌবাহিনীতে রয়েছে ১২০টিরও বেশি জাহাজ।
আরও পড়ুন: ইসরাইলকে থামাতে জাতিসংঘকে বলপ্রয়োগ করতে হবে: এরদোয়ান
এছাড়া অচিরেই তুরস্কের নৌবাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে দেশটির ইতিহাসের প্রথম বিমানবাহী রণতরী এবং টিএফ ২০০০ ক্লাসের গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার এবং ইসটিফ ক্লাসের ফ্রিগেট।
]]>