বুধবার সিরিয়ার পররাষ্ট্র ও প্রবাসী বিষয়ক মন্ত্রী আসাদ আল শাইবানি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মেজর জেনারেল মুরহাফ আবু কাসরা তুরস্ক সফরে যান। তাদের সঙ্গে রয়েছেন গোয়েন্দা প্রধান হুসেইন সালামেহ। এদিন এক বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে অংশ নেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান ও সিরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল শাইবানি।
তুর্কি গণমাধ্যম ডেইলি সাবাহর এক প্রতিবেদন মতে, যৌথ বিবৃতিতে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিরিয়ার উপর অস্থিতিশীল নীতির জন্য ইসরাইলের সমালোচনা করেছেন এবং এক দশকেরও বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধের পর সিরিয়ার পুনর্গঠনের প্রচেষ্টাকে ক্ষুন্ন করার জন্য ওয়াইপিজিকে দায়ী করেছেন।
হাকান ফিদান বলেন, ইসরাইল সিরিয়ায় ‘কিছু সমস্যা তৈরি করেছে’ এবং প্রতিবেশী দেশটিকে এই অঞ্চলে তাদের সম্প্রসারণবাদী নীতির লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। সিরিয়াকে দুর্বল করে রাখা ইসরাইলের কৌশল, আর অরাজকতা থেকে লাভবান হওয়ার জন্যই সেটা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: একসঙ্গে তুরস্ক সফরে সিরিয়ার দুই মন্ত্রী
ইসরাইলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশীদের নিরাপত্তা নষ্ট করে ইসরাইল নিজের নিরাপত্তা অর্জন করতে পারবে না। বরং প্রতিবেশী দেশগুলো সমৃদ্ধ ও নিরাপদ কিনা তা আগে নিশ্চিত করা উচিত। আপনি যদি এই দেশগুলোকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেন, যদি সেই লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেন, তাহলে এটি এই অঞ্চলে অন্যান্য সংকটের সূত্রপাত করতে পারে।’
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে দামেস্কের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশে স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করছে। এক্ষেত্রে সহায়তার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে আঙ্কারা।
তুর্কি কর্তৃপক্ষ সিরিয়ার রাজনৈতিক ঐক্য এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই সঙ্গে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করার জন্য দামেস্কের অনুরোধে প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করছে।
সম্প্রতি সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুয়েইদা প্রদেশে দ্রুজ গোষ্ঠী ও বেদুইন উপজাতির মধ্যে সংঘাত এবং তাতে ইসরাইলি সামরিক হস্তক্ষেপ শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। বর্তমানে এই অঞ্চলে একটি যুদ্ধবিরতি চলছে যা এরপর গত ১৯ জুলাই কার্যকর হয়। কিন্তু উত্তেজনা এখনও তুঙ্গে রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার জয় হয়েছে: হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী
ওয়াইপিজি প্রসঙ্গে হাকান ফিদান বলেন, গোষ্ঠীটি যেন উত্তর সিরিয়ায় নিজেদের আধিপত্য বিস্তার ও বিভাজনের প্রচেষ্টা বন্ধ করে এবং সময় নষ্ট না করে সিরিয়ার জাতীয় কাঠামোর সঙ্গে যুক্ত হয়। ফিদান স্পষ্ট করে জানান, তুরস্ক কোনো দখলের চেষ্টা করছে না, তবে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।
ওয়াইপিজি হলো পিকেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মার্কিন-সমর্থিত সিরিয়ান শাখা। গৃহযুদ্ধের সময় তারা উত্তর সিরিয়ার তেল সমৃদ্ধ অঞ্চল দখল করে এবং দায়েশ তথা আইএস সন্ত্রাসীদের অবশিষ্টাংশ তাড়িয়ে দেওয়ার আড়ালে ওয়াশিংটন থেকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা পায়।