বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার ইফতেখার হাসান ভূঁইয়া বাদী হয়ে এ মামলা করে। মামলায় প্রধান সাক্ষী করা হয়েছে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এমদাদুল হককে।
মামলার আসামিরা হলেন- ছাত্র প্রতিনিধি নাহিদ রাব্বি (২৮)। তিনি পরশুরাম পৌর এলাকার কোলাপাড়া গ্রামের নুরুন্নবীর ছেলে। মামলার অপর আসামি আব্দুল কাদের (৩০) অনন্তপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে।
ফেনীর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাকরি প্রার্থী আবদুল কাদের নামের হৃদয় নামে এক বেকার যুবকের কাছে ১০ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে রাব্বিকে প্রধান আসামি করে দুজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘাটাইলে বিদ্যুৎ অফিসে দুর্নীতির জাল, ভুয়া বিলের ফাঁদে অসহায় গ্রাহকরা
এজাহার উল্লেখ করা হয়েছে ডা. মো. ইফতেখার হাসান ভূঁঞা হাসপাতালে অবস্থানকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি অডিও দেখতে পান।
সেখানে শোনা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ রাব্বি ফেনীর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ‘অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক’ পদে অর্থের বিনিময়ে আব্দুল কাদেরকে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে দশ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।
দুই মিনিট ২১ সেকেন্ডের কথোপকথনে নাহিদ রাব্বি ফেনী সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নিয়োগ পাইয়ে দেবে বলে দশ লাখ টাকা দাবি করার ঘটনায় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নাহিদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নাহিদ দাবি করেছেন, ফাঁস হওয়া অডিওটি এআই দিয়ে তৈরি। এমন ঘটনার সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন।
তবে অডিওটির কথোপকথনের সত্যতা চাকরিপ্রত্যাশী যুবক আবদুল কাদের নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সমন্বয়ক পরিচয়দানকারী নাহিদ আগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সরকার পরিবর্তনের আগে তিনি আন্দোলন–সংগ্রামে না থেকেও বিভিন্ন সময় নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। মূলত তার মুখোশ উন্মোচন করতে এমন কৌশল তিনি বেছে নিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে ঘুষের অভিযোগ
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেনী জেলার সাবেক সমন্বয়ক ও বর্তমান ছাত্র প্রতিনিধি মুহাইমিন তাজিম বলেন, ‘ফেনী জেলাসহ ছয় উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কমিটি নেই। কোথাও কোনো সমন্বয়কও নেই। তবে জেলাসহ প্রতিটি উপজেলায় ছাত্র প্রতিনিধি আছে একাধিক জন। পরশুরামের নাহিদ রাব্বি একজন ছাত্র প্রতিনিধি। রাব্বি একজন ভালো মানের সংগঠক, তিনি এমন কাজ করতে পারেন, তা বিশ্বাস হচ্ছে না।’
ফেনী সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (২০ জুন) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফেনী জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে বিভিন্ন পদের নিয়োগ পরীক্ষা। ১১৫টি পদের জন্য ১২ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। প্রতিটি পদের জন্য লড়াই করবেন ১০৮ জন।
পরশুরাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল হাকিম মামলা রেকর্ডের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।