সাইবার হামলায় এক নিমিষেই এলোমেলো করে দিতে পারে ফ্লাইট অপারেশন সিস্টেম, যাত্রীর গন্তব্য রুট, ব্যাগেজ, মালামাল তথ্য, অন্যান্য দেশের সঙ্গে সংযোগসহ এয়ারপোর্টের অটোমেশন ব্যবস্থায় সংযুক্ত থাকা সব ধরনের কার্যক্রম। উন্নত বিশ্বের অনেক বিমানবন্দরে অটোমেশন ব্যবস্থার সঙ্গে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ও সাইবার সিকিউরিটি বিভাগ থাকা সত্ত্বেও নানাভাবে সাইবার হামলার ঘটনা ঘটছেই।
মূলত তথ্য প্রযুক্তিতে বিশ্ব যতটা এগোচ্ছে, তার চেয়ে বেশি গতিতে তৎপর প্রযুক্তি খাতের অপরাধী চক্র। এমন অবস্থার মধ্যেই স্পর্শকাতর খাত হিসেবে মডার্ন টেকনোলজি ও বিশেষায়িত আইসিটি টিম ছাড়াই চলছে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। চরম ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সাইবার হামলা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন এখনো আঁতুর ঘরে।
দুর্বল এই ব্যবস্থাপনা যে কোনো সময় সংঘটিত করতে পারে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা। যা সামাল দেয়া কঠিন হবে সংস্থাটির। বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন কেপিআইভুক্ত সংস্থা হওয়ায় অনেক আগেই সাইবার হামলা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদার করতে হতো বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: দেশের বিমানবন্দরগুলোতে সাইবার হামলার ঝুঁকি, কী বলছে বেবিচক?
নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, সিভিল এভিয়েশনের নিজস্ব কোনো আইটি সেল নেই। এটি অনেক আগেই করা উচিত ছিল। প্রতিটি বড় প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার এমন সেল থাকা জরুরি। এটি দ্রুত গড়ে তুলতে হবে। তবে শুধু আউটসোর্স করলে হবে না; নিজস্ব সক্ষমতা থাকতে হবে। কারণ আউটসোর্স করলেও যাদের থেকে কাজ করানো হবে, তাদের কাজ পর্যবেক্ষণ ও বুঝে নেয়ার সক্ষমতা থাকতে হবে।
এদিকে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো সাইবার সিকিউরিটি সেল গঠনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। নিরাপত্তায় দুর্বল ব্যবস্থা দেশীয় কালচার বলেও মনে করে বেবিচক। বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) এয়ার কমডোর মো. আসিফ ইকবাল জানান, এরই মধ্যে একজন আইটি ডিরেক্টর নিয়োগ করা হয়েছে। এখন প্রয়োজন সাইবার সিকিউরিটি সেল, অর্গানোগ্রাম ও যথেষ্ট জনবল। সেলের অধীনে কর্মীরা যে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়মিত মনিটর করবে, পাশাপাশি প্রশিক্ষণ দেবে ও সক্ষমতা বাড়াবে।
আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন সংস্থা, আইকাও-এর সবশেষ অডিট অনুযায়ী, সাইবার নিরাপত্তায় বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের নেয়া ব্যবস্থা আইকাও এনেক্স ১৭ ও ডিএফটি ইউকের মানদণ্ড হিসেবে গ্রহণযোগ্য হলেও আধুনিকায়ন প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
]]>