সাড়ে ১৩ লাখ টাকার ব্রিজের মেয়াদ মাত্র ৫ মাস

৩ সপ্তাহ আগে
সাড়ে ১৩ লাখ টাকার ব্রিজের মেয়াদ মাত্র ৫ মাস। শুনতে অবাক লাগলেও এমনটি হচ্ছে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে। কয়েক মাস আগে করা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্রিজ ভেঙ্গে সেখানে এখন আবার নতুন করে কালভার্ট নির্মাণ করবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।

সরেজমিনে হরিণাকুন্ডু উপজেলার কণ্যাদহ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জিকে সেচ খালের উপর গত ৫ মাস আগে নির্মাণ করা হয়েছে ব্রিজটি। ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পের বরাদ্দ অনুযায়ী জিকে সেচ খালের উপর নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিজের গায়ে এখনও মোড়ানো রয়েছে নতুন পলিথিন। শেষ হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অডিটও। কিন্তু একই স্থানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আরেকটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই স্থানেই আবার একটি কালভার্ট নির্মাণ করবেন তারা। যে কারণে নতুন ব্রিজটি ভেঙে আবারও কালভার্ট করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছেন। ফলে সুষ্ঠু পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও দুই বিভাগের সমন্বয়ের অভাবে সরকারের গচ্চা যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এদিকে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় উপকারভোগীরা।


ওই গ্রামের আরশেদ আলী নামের এক কৃষক বলেন, ব্রিজটি নির্মাণেও করা হয়েছে অনিয়ম। সড়ক অনুযায়ী ব্রিজ না করায় প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। ব্রিজটি যখন নির্মাণ করা হয় তখন তারাই বলেছিলো কয়েকদিন পর আবারো নতুন ব্রিজ হবে। আমার নিষেধ করার পরও তারা নিম্নমানের এই ব্রিজটি নির্মাণ করেছেন।


রাশেদ হক নামের এক বাসিন্দা বলেন, সরকারের কত টাকা হয়েছে যে ৫ মাসের মাথায় নতুন ব্রিজ ভেঙ্গে আবারো ব্রিজ করবে। নতুন ব্রিজই যদি করবে তাহলে এই ব্রিজটি করার দরকার ছিল না। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক ও জনপথ সমন্বয় করলে সরকারের এই বাড়তি টাকা গচ্ছা যেত না।


আরও পড়ুন: ব্রিজের পিলার দেখেই কেটে গেল ৪ বছর!


এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিনহাজুল ইসলাম বলেন, জিকে সেচ খাল যেহেতু আমাদের আওতাধীন তাই আমরা ব্রিজটি নির্মাণ করেছি। কারণে অনেকদিন আগে ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার কারণে এলাকাবাসীর ভোগান্তি হচ্ছিল। সেই ভোগান্তি দূর করতেই আমরা ব্রিজটি নির্মাণ করেছি। সড়ক ও জনপথ যদি ওই স্থানে ব্রিজ করে তাহলে আমাদের কাছ থেকে এনওসি নিয়ে করতে হবে। কিন্তু তারা এনওসি না নিয়েই স্টিমেট করেছে। আগামীতে সওজ বা এলজিইডি যদি জিকে সেচ খালের উপর ব্রিজ করে আমাদের সাথে আগে থেকে যোগাযোগ করলে এই ভুল বোঝাবুঝি হবে না। এ ব্যাপারে আমরাও সচেষ্ট থাকব।


ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ব্রিজটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আগের নির্বাহী প্রকৌশলী থাকার সময় করা। ব্রিজটি যখন নির্মাণ করা হয় সেসময় আমার আগের নির্বাহী প্রকৌশলী দু’দফা চিঠিও দিয়েছিল কিন্তু তাদের মাঝে সমন্বয় হয়নি। ব্রিজটি নতুন হলেও এলাকার মানুষের চলাচলের অনুপযোগী। তাই এলাকার মানুষের ভোগান্তি দূর করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সমন্বয় করে নতুন ব্রিজের কাজ শুরু হবে। এতে আশা করি এলাকার মানুষ উপকৃত হবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন