শুক্রবার (২০ জুন) সকালে বরিশাল নগরীর সদর রোডে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বরিশাল জেলা শাখার আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বরিশাল জেলার সমন্বয়ক ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী।
এ সময়ে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানির প্রধান গেটওয়ে চট্টগ্রাম বন্দর। দেশের মোট আমদানি-রপ্তানির ৮০ শতাংশের বেশি হয় এই বন্দর দিয়ে। দেশের মোট কনটেইনার পণ্য ওঠানামার ৫৫ শতাংশই হয় নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল দিয়ে। ফলে শুধু চট্টগ্রাম বন্দরই নয়; দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এনসিটি।
বক্তরা আরও বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইজারা ও সুবিধা দিয়ে ভারতসহ বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদী দেশকে খুশি রেখেছে। ঠিক একইপন্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বন্দর চুক্তির মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিদের সুবিধা দিতে চাচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রের নাম ও চার মূলনীতি পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বাসদ
তারা বলেন, ‘দুবাইভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ড নামের যে বিদেশি কোম্পানিকে নিউমুরিং বন্দর দেওয়ার পরিকল্পনা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, এ কোম্পানির সঙ্গে আমেরিকান নেভির সরাসরি চুক্তি রয়েছে। এ কোম্পানি আন্তর্জাতিকভাবে যেসব দেশে বন্দর পরিচালনা করে সেখানে আমেরিকান নেভির জাহাজ ভিড়তে পারবে।
দক্ষিণ এশিয়াতে আমেরিকান ঘাঁটি না থাকায় চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশকে ঘাঁটি বানিয়ে ওই এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করার পরিকল্পনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। আবার মানবিক করিডোরের নামে রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মিকে সহায়তা করার যে আত্মঘাতী পরিকল্পনা সরকার করছে, সেই পরিকল্পনা মায়ানমারসহ এই অঞ্চলের সাম্রাজ্যবাদী শক্তিদের সাথে আমাদের স্থায়ী দ্বন্দ্বের জন্ম দেবে যা অপ্রয়োজনীয়।
এমনকি জাতিসংঘও বলেছে তারা এ করিডোরের কথা কখনও বলেনি। তবুও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অতিউৎসাহী হয়ে এধরনের আত্মঘাতী পরিকল্পনা করা সাম্রাজ্যবাদী প্রভুদের খুশি করার জন্য কিনা তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘আমেরিকা যে দেশের বন্ধু হয় তাদের নতুন করে শত্রু প্রয়োজন হয় না। আমেরিকা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে এমন কিছু চুক্তির মাধ্যমে প্রবেশ করে পরবর্তীতে সেই দেশকে কাজে লাগিয়ে তাদের স্বার্থসিদ্ধি করেছে।’
আরও পড়ুন: বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গ্ৰেফতার
অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের কাজ ছিল জুলাই গণহত্যার বিচারের ব্যবস্থা করা ও দেশের অভ্যন্তরীণ আইন পরিস্থিতি ঠিক করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়া। তারা সেটা না করে তাড়াহুড়ো করে আমেরিকাকে সুবিধা দিতে বিভিন্ন চুক্তি করতে ব্যস্ত। বক্তারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য শহিদুল ইসলাম, শহিদুল শেখ, সদস্য ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার ক্রীড়া সম্পাদক গাজী মোহাম্মদ বেল্লাল হোসেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক সুজন আহমেদ প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করা হয়।
]]>