যানজটের নগরীতে স্বস্তির বাহন হয়ে আসে মেট্রোরেল। কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো, নির্ধারিত সময়ে ট্রেন, প্রযুক্তিনির্ভর সুবিধা-সব মিলিয়ে দেশের জন্য এক নতুন যোগাযোগ মাধ্যম। কিন্তু সেই সম্ভাবনা নিত্যদিন হোঁচট খাচ্ছে বাস্তবতার দেয়ালে।
অসহ্য যানজট আর অবিরাম হর্নের শব্দের ক্লান্তি ভেঙে, স্বস্তি আর গতির বার্তা হয়ে এসেছে মেট্রোরেল। এই স্বপ্নযাত্রায় ব্যস্ত নগরীর জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা মানুষগুলোর ভোগান্তি কমলেও রয়ে গেছে বাস্তবতার কাঁটা। অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে দীর্ঘ লাইন আর দম বন্ধ হওয়া ভিড়ে লড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
সবগুলো কাউন্টারে দীর্ঘ লাইন, ট্রেনের জন্য অপেক্ষা, সবশেষে গাদাগাদি করে যাত্রা। এসবই এখন মেট্রোরেলের নিয়মিত চিত্র। দিনকে দিন যাত্রীর চাপ বাড়লেও বাড়েনি মেট্রোর কোচ সংখ্যা। উদ্বোধনের সময় ছয়টি বগি নিয়ে যাত্রা করে মেট্রো। তবে কথা ছিল মেট্রো ছুটবে ৮ বগি নিয়ে কিন্তু ৬ বগিতেই আটকে আছে সাধের এই যান।
যাত্রীদের দাবি, ট্রেন কিংবা কোচ সংখ্যা বাড়ালে আরও স্বস্তিতে যাতায়াত করতে পারবেন তারা। পাশাপাশি নানা কারণে মাঝেমাঝেই ট্রেন বিকলের যে ঘটনাগুলো ঘটছে তাও দূর করতে কার্যকর ব্যবস্থা চান যাত্রীরা।

ভোগান্তি কমাতে কী চিন্তা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের? আদৌ কী বাড়বে কোচ কিংবা ট্রেনের সংখ্যা?
আরও পড়ুন: পৌনে ২ ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘এখন ৬টা কোচ চলে, আমরা সংখ্যা বাড়িয়ে ৮টি কোচ করবো। এটা করার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং ফিজিবিলিটি লাগবে। সিগন্যালিংয়ে কিছু পরিবর্তন করতে হবে এবং কনস্ট্রাকশনেও পরিবর্তন আসবে। এখনও কোনো ডেফিনেট কস্ট আমরা পাইনি। এটা করতে এক থেকে দেড় বছর লাগবে। ইট ইজ নট দ্যাট ইজি।’
বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবশ্য বলছেন, উদ্বোধনের আগেই বলা হয়েছিল দুটি কোচ বাড়ানো হবে ২০৩০ সালের পর। কিন্তু বর্তমানে যাত্রী চাপের কারণে যতদ্রুত সম্ভব বগি বৃদ্ধিতে কাজ করবেন তারা।

ফারুক আহমেদ বলেন, ‘প্রথম থেকেই এটা বলা ছিল যে ৬ কোচই চলবে। এভাবে ২০৩০ সাল পর্যন্ত চলবে। এরপর এটাকে ৮ কোচে বাড়ানো হবে। কিন্তু সে সময় কোনো কস্ট বা কি কি সিগনিফিকেন্ট দরকার, সে বিষয়ে কোনো আউটলাইন করা হয়নি। শুধু ডিজাইন করতে হবে এটা লেখা ছিল। কিন্তু ডিজাইন করতে কত সময় লাগবে, কি কি লাগবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো আউটলাইন করা হয়নি।’
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয় মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ। পরের বছরের ৪ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ। আর মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের কাজ এখনও চলমান।