প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ঘেরা সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর এলাকা। ভারতের মেঘালয় থেকে ঝর্ণার স্রোতে দেশের ধলাই নদে এসে পৌঁছায় এই খনিজ সম্পদ, যা দেখতে প্রতি বছর সিলেটে ভিড় জমান লাখো পর্যটক। কিন্তু সম্প্রতি পাথর লুটের ঘটনায় হুমকির মুখে এই পর্যটন খাত।
সিলেটের পাথর লুটের ঘটনা সামনে এলে সবার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে প্রাণিজ সম্পদের বিশাল আঁধার বঙ্গোপসাগর নিয়ে। হরিলুট না হলেও সাগরের তলদেশে ক্রমেই বিলীন হচ্ছে এর জীববৈচিত্র্য। বেসরকারি সংস্থা এসডোর ২০২৩ সালের গবেষণা মতে, বঙ্গোপসাগরে প্রতি বছর প্রায় ২৬ লাখ ৩৭ হাজার টন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে নদী ও সাগরের মৎস্য সম্পদ বিলীনের আশঙ্কা গবেষকদের।
ব্র্যাকের কক্সবাজারের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান সময় সংবাদকে বলেন, ‘আমরা পলিথিনসহ নানা বর্জ্য ফেলছি। এসব ফেলে নদীর নিচটা ভরাট করে ফেললে মাছ তাদের জায়গা পরিবর্তন করবে। এভাবে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। আমারা যেভাবে পলিথিন ফেলছি, তাতে এক সময় আমাদের মৎস্য সম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদও হারিয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন: পাথর পুনঃস্থাপন / ভোলাগঞ্জ কি আগের রূপে ফিরবে?
চলতি বছর কক্সবাজারের ১২০ কিলোমিটার এলাকায় গবেষণা চালায় বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিউটিউট। গবেষণায় মাছের ফুলকা ও পরিপাকতন্ত্রে মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা পায় তারা, যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক বলে মন্তব্য গবেষকদের। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় এনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ সাবেক পরিবেশ অধিদফতর কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. আব্দুস সোবহানের।
পরিবেশ অধিদফতরের সাবেক এ অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, পলিথিন পানিতে যাচ্ছে। এগুলো ভেঙে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় পরিণত হয়। তখন মাছ এগুলো খায়। পরে মাছের মাধ্যমে এগুলো আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আইনগতভাবে যে বিভাগের ওপর যে দায়িত্ব, তারা সেই দায়িত্ব পালন করলে এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: অবৈধ ট্রলিং বোটের আধিপত্যে সাগরে মাছ মিলছে না?
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ২০১০- এ পরিবেশ রক্ষায় দায়িত্বশীলদের দ্রুত গতিতে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই আইনে যে কোনো পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে কর্মকর্তাদের।
]]>