বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে তাবলিগ জামাতের জুবায়েরপন্থিরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সাদপন্থিরা ইজতেমা করতে চাইলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।
তাবলিগ জামাতের জুবায়েরপন্থি মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবউল্লাহ রায়হান জানান, গতকালের সংঘর্ষে তাদের তিনজন সাথী মারা গেছেন। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করা হবে। মাওলানা সাদের অনুসারীরা প্রশাসনের আদেশ অমান্য করেছে বলেও অভিযোগ তার।
হাবিবউল্লাহ রায়হান বলেন,
প্রসাশনের সিদ্ধান্তকে যারা বার বার অবমাননা করছেন, তারা কীভাবে ইজতেমা করবেন? ইজতেমা ইনশাল্লাহ হবে, সেটা আমদেরই হবে।
এদিকে বিকালে মিরপুরে একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান মাওলানা সাদপন্থিরা। তাদের অভিযোগ, প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যবহার করে বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রায়ায় হামলা করা হয়েছে।
তারা অভিযোগ করে বলেন, রাজনৈতিক শক্তি ও তৃতীয় পক্ষের উসকানিতে তাবলিগ জামাতের পরিচয়ে একটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইজতেমাতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে: মাক্কী
তবে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির পর টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।
জানা গেছে, ইজতেমা মাঠকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত ফোর্স। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি।
সকালে মিন্টো রোডের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
আরও পড়ুন: ইজতেমা ময়দান ছাড়ছেন তাবলিগের সাথীরা
তিনি আরও জানান, আবদুল্লাহপুর, কামারপাড়া, উত্তরা সেক্টর ১০ এবং তুরাগের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে এরই মধ্যে যেকোনো প্রকারের সভা-সমাবেশ, মিছিল, গণজমায়েত, বিক্ষোভ বা শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করলে ডিএমপি কঠোরভাবে দমন করবে।
এর আগে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে একাধিক প্রাণহানির পর সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছেন সাদ ও জুবায়েরন্থি মুসল্লিরা।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার আলেখার চর এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন জুবায়েরপন্থিরা। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যলয়ে যান। টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে হামলা ও হত্যার ঘটনায় দোষীদের বিচার দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন তারা। একই দাবিতে নেত্রকোনা, ঠাকুরগাঁওয়েও বিক্ষোভ করেন তাবলিগ জামাতের অনুসারীরা।
]]>