কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির ময়মনসিংহ অঞ্চলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনের প্রথমপর্বের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বেএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মির্লাত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন। এ ছাড়া বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
এ দিকে দীর্ঘদিন পরে দলের কাউন্সিলকে ঘিরে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সম্মেলনের সফলতা কামনা করে এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের স্বাগত জানিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে সাটানো হয়েছে পোস্টার-ব্যানার-প্যানাফ্ল্যাক্স। এসবে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। নির্মাণ করা হয়েছে শত শত তোরণ। জেলা সদর ছাড়াও প্রতিটি উপজেলায় চলছে সম্মেলনকে ঘিরে শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি। আয়োজকরা বলছেন, সম্মেলনে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ অংশ নিবেন। সেজন্য পুরাতন স্টেডিয়ামে নির্মাণ করা হচ্ছে বিশাল প্যান্ডেল। বৃষ্টির বিষয়টি মাথায় রেখে চলছে প্যান্ডেল তৈরি।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০, আটক ৪
জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম জানান, সম্মেলন অনুষ্ঠানের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রেকর্ড সংখ্যক দলীয় নেতাকর্মী এতে অংশ নিবেন বলে আশা করছেন তিনি।
সম্মেলনের কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করতে নেয়া হচ্ছে প্রস্তুতি। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। প্রায় দুই হাজার ১’শ কাউন্সিলর ভোট দিয়ে তাদের নেতা নির্বাচন করবেন। এ জন্য ভোট গ্রহণ করতে গঠিত নির্বাচন কমিশন এরইমধ্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষনা করেছে। প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর চলছে কাউন্সিলরদের ভোট পেতে প্রার্থীদের তোড়জোর ও প্রচারণা। সভাপতি পতে বর্তমান সভাপতি মো. শরীফুল ইসলাম ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রুহুল হোসাইন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেলসহ ৪ জন প্রার্থী।
এ দিকে নির্বাচনের ঠিক আগ মূহুর্তে দলের সভাপতি একাধিক পদে আসীন থাকাকে কেন্দ্র করে বিভেদ ও কোন্দল সামনে চলে এসেছে। টানা ৯ বছর সভাপতির দায়িত্বে থাকা শরীফুল ইসলাম দলের গঠনতন্ত্র অমান্য করে একাধিক পদ দখলে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে আবারও প্রার্থী হওয়া অগণতান্ত্রিক ও গঠনতন্ত্র বিরোধী বলে অভিযোগ তুলেছেন তারা। এরই মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করা দুই প্রার্থী ‘ এক নেতা, এক পদ’ দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন সভাপতি পদপ্রার্থী রুহুল হোসাইন। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সভাপতি শরীফুল ইসরাম জেলার দায়িত্ব ছাড়াও বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বেশিরভাগ সময় ঢাকা ও দেশের বাইরে থাকেন। ফলে জেলা বিএনপির কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। তার উচিত যে কোনো একটি পদ ছেড়ে দেয়া। এর আগে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে পুরাতন স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করেন সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল। তিনি নির্বাচিত হলে সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। সভাপতিকেও একটি পদ ছাড়ার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে সালিশিতে বিএনপির কেউ গেলেই বহিষ্কার: শেখ ফরিদ
তবে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম জানান, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তেই তিনি একাধিক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এ নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে কোন নির্দেশনা এলে মেনে নিবেন বলেও জানান তিনি।
তবে দলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন, সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে তৃণমূলের কাউন্সিলররা জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। আর সম্মেলনের পরই সব ধরনের সমস্যার সমাধান হবে।
]]>