এখন পর্যন্ত আর্জেন্টিনা তিনবার বিশ্বকাপ জিতেছে। ১৯৭৮ সালে দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে কোচ সিজার লুইস মেনত্তির কৌশল বিশ্বকাপ এনে দেয় আলবিসেলেস্তেদের। ১৯৮৬ সালে দ্বিতীয়বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। এই বিশ্বকাপের অবিসংবাদিত নায়ক দিয়েগো ম্যারাডোনা। আর ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে ৩৬ বছরের খরা কাটিয়ে আলবিসেলেস্তেদের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেন লিওনেল মেসি। প্রশ্ন হচ্ছে, আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতানো এই তিন দলের মধ্যে সেরা কোনটি?
লিওনেল স্ক্যালোনি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই উড়ছেন মেসিরা। ২০২১ সাল থেকে মোট ৪টি শিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ ছাড়াও টানা দুইবার জিতেছে কোপা আমেরিকা। সাফল্যের কারণে তাই অনেকেই মেসির দলটিকেই আর্জেন্টিনার ইতিহাসের সেরা বলে মানছেন। আর্জেন্টিনার প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক মারিও কেম্পেস এবার এই বিতর্কে মুখ খুলেছেন। অ্যাজ'র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এই স্ট্রাইকার পরিস্কার জানিয়েছেন, সর্বকালের সেরার খেতাব পেতে মেসির দলের এখনও কিছুটা প্রমাণ দেয়ার বাকি আছে।
আরও পড়ুন: গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে ব্রাজিল, হতাশ করলো আর্জেন্টিনা
তিনি বলেন, 'এই দল (মেসির আর্জেন্টিনা) মাত্র একটি বিশ্বকাপ জিতেছে। ১৯৭৮ এর দল একটি জিতেছে, ১৯৮৬ সালের দলও একটি। এখন তারা যদি পরবর্তী বিশ্বকাপও জিততে পারে, আমি আপনার সঙ্গে একমত হব–তারা শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত, আপনাকে দুটি বিশ্বকাপ জিততে হবে নিজেকে শ্রেষ্ঠ দাবি করতে।'
মেসির দল বিশ্বকাপের আগে-পরে ২০২১ এবং ২০২৪ এর কোপা আমেরিকার শিরোপাও ঘুরে তুলেছে। কিন্তু শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে এই অর্জনকে আমলে নিতে নারাজ কেম্পেস। এই টুর্নামেন্টে টানা দুই ফাইনালে হারের বিষয়টি তিনি সামনে নিয়ে এসেছেন। তার মতে, মহাদেশীয় ট্রফি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো দলের শ্রেষ্ঠত্ব বাড়িয়ে দেয় না।

তিনি বলেন, 'হ্যাঁ, কোপা আমেরিকা জেতাটা দারুণ, কিন্তু আর্জেন্টিনা চিলির কাছে দুটি ফাইনাল হেরেছে এবং তাতে দুনিয়া শেষ হয়ে যায়নি। এখন তারা টানা দুটি জিতেছে, শুধুমাত্র এ কারণেই তারা রাতারাতি সর্বকালের সেরা হয়ে যাবে না। যদি তারা আরও একটি বিশ্বকাপ জিততে পারে, তবে আমি স্বীকৃতি দেব।'
কেম্পেস ফুটবল ইতিহাসের সেরা জাতীয় দলের ব্যাপারে নিজের মতামত জানিয়েছেন স্পষ্টভাবেই। এমনকি এমন অনেক দলের কথাও বলেছেন, যারা কোনোদিন বিশ্বকাপই জিততে পারেনি।
আরও পড়ুন: চুক্তি নবায়ন ছাড়াই ভুটানে যাচ্ছেন সাবিনারা
তিনি বলেন, '১৯৭০ এর ব্রাজিল ছিল এবং নেদারল্যান্ড দলও, যারা কোনোকিছুই জেতেনি এবং এরপরও সর্বকালের অন্যতম সেরা। কাতার বিশ্বকাপের তিন মাস আগে ফুটবল শুরু হয়নি। এই খেলার দীর্ঘ ইতিহাস আছে এবং মানুষের উচিত তাকে সম্মান জানানো।'
রিভারপ্লেট, রোসারিও সেন্ট্রাল এবং ভ্যালেন্সিয়ায় খেলা কেম্পেস এরপর সকলকে স্মরণ করিয়ে দেন, 'আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাস আমরা সবাই মিলেই লিখেছি। এটা শুধু সাম্প্রতিক অধ্যায়ের নয়।'
কেম্পেস ১৯৭৮ এর ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে ৬ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও জোড়া গোল করেন তিনি। সেই বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বল তার হাতেই উঠেছিল।