সরকারি হাসপাতালের এ কী হাল!

১১ ঘন্টা আগে
সিলেটের সরকারি হাসপাতালগুলোতে দিন দিন তীব্র হচ্ছে ওষুধ সংকট। চলতি অর্থবছরে চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে দুই কোটি ৫০ লাখ ৪৬ হাজার ১৭৮ টাকার। তারপরও চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সরকারি ফার্মেসিতে না পেয়ে বাধ্য হচ্ছেন বাইরে থেকে উচ্চমূল্যে ওষুধ কিনতে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষ।

রোববার (১৬ নভেম্বর) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল ঘুরে দেখা যায়, সিলেট বিভাগের ৪ জেলার কোটি মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসা এই হাসপাতালটি। দিন দিন রোগী বাড়লেও সেই তুলনায় বরাদ্দ হয়নি ওষুধ।


সূত্র জানায়, সিলেটের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ওষুধের সংকট এখন নিত্যদিনের ঘটনা। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সরকারি ফার্মেসিতে ওষুধ না পেয়ে বাইরে থেকেই কিনছেন প্রেসক্রিপশনের প্রায় সব ওষুধ। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষ। অনেকেই চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখেই বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন।


ভুক্তভোগীরা জানান, আটটি ওষুধ লিখে দিলেও সরকারি ওষুধ মিলছে একটি। বাকি ওষুধ চড়াদাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে বাহিরে থেকে। এতে কষ্ট বেড়ে যাচ্ছে খরচ ও বাড়ছে। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল— সবখানেই এখন একই চিত্র। সরকারি ফার্মেসিতে নেই প্রয়োজনীয় ওষুধ।


আরও পড়ুন: আট বছরে শিশু হাসপাতালের নির্মাণ কাজ হয়নি অর্ধেকও, এখন বন্ধ!


অভিযোগ উঠেছে, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরবরাহে অনিয়ম, দুর্নীতি আর তদারকির অভাবেই এই সংকট তৈরি হয়েছে। সরকার ১৯৯৮ সালে জনগণের প্রয়োজন বিবেচনা করে আরও ৪০০ শয্যা যোগ করে ৯০০ শয্যা বাড়ানো হয় হাসপাতালটিকে।


কর্তৃপক্ষ জানায়, ২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বরাদ্দ প্রায় ২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ইডিসিএল থেকে ৭৫ শতাংশ ওষুধ কিনতে হবে বাকি ওষুধ কিনতে হবে ই-টেন্ডারের মাধ্যমে। এমন অবস্থায় প্রতি মাসে ওষুধের চাহিদা পাঠানো হলেও সরবরাহ করা হচ্ছে সীমিত আকারে, তবে ২৫-২৬ অর্থবছরে চাহিদা অনুযায়ী সপ্তম বারের মত ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে দুই কোটি ৫০ লাখ ৪৬ হাজার ১৭৮ টাকার বিপরীতে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সংকট তৈরি হচ্ছে।


সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টোর অফিসার ডা. মোহাম্মদ সোহেল-আল-রাফি সময় সংবাদকে জানান, বাজেট বাড়ানোর জন্য আলাপ আলোচনা চলছে।


আরও পড়ুন: খুলনায় বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ, ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৮৯


এ বিষয়ে সিলেটের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. আনিসুর রহমান সময় সংবাদকে জানান, ৯০০ শয্যার হাসপাতাল হলেও রোগী থাকেন তিন হাজারের মত। তবে এখন যে ওষুধগুলো টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আসে। এর চাহিদা অনুযায়ী এখন চলে আসার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।


এদিকে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ বলছে ওষুধ সংকটের বিষয়টি আমলে নিয়ে নিয়মিত মনিটর এবং বাজেট বাড়ানোসহ ওষুধ সরবরাহ এবং সংকট শিগগিরই পূরণ হবে বলে জানান সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল উমর রাশেদ মুনির।


তিনি সময় সংবাদকে জানান, সব সমস্যা কাটিয়ে দ্রুত ওষুধ সংকট নিরসনে বাজেট বাড়ানোসহ টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ চলমান রয়েছে।


এ দিকে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে সিলেটের নিয়ন্ত্রণাধীন সব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানসমূহের হাসপাতাল থেকে ওষুধ সংকটের তালিকা সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। ওষুধ সংকটে নতুন বরাদ্দ এলে সরবরাহ আরও সহজ হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না বাড়ালে এই সংকট কাটবে না।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন