শনিবার (১৪ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দীকের সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, শনিবার (১৪ জুন) বণিক বার্তা পত্রিকায় ‘সরকারি অর্থে হজে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মালী, চালক, গানম্যান ও পিয়ন; নির্দেশনা না মেনে সফরসঙ্গী উপদেষ্টার স্ত্রী ও দুই বোন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ পত্রিকার সূত্রে বাংলাদেশ প্রতিদিন ও দৈনিক কালের কণ্ঠ একই সংবাদ প্রকাশ করেছে। এ সংবাদে মনগড়া ও ভুল তথ্য উপস্থাপন করা ছাড়াও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের বক্তব্যে উদ্ধৃত তথ্যের সত্যতা যাচাই না করেই সংবাদ প্রকাশ করায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে এবং ধর্ম উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।
এতে আর বলা হয়, সংবাদে ‘হজ ব্যবস্থাপনায় মালী, চালক ও পিয়ন পাঠানো’ বিষয়ে যেসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা ‘সত্যের অপপ্রকাশ’ এবং হজ ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভূমিকা খাটো করে দেখানোর অপচেষ্টা।
মন্ত্রণালয় বলছে, হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২২ অনুযায়ী সরকারি হজ কার্যক্রমের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সৌদি আরবে পাঠানো হয়। হজ মৌসুমে মক্কা, মদিনা ও জেদ্দায় পরিচালিত তিনটি অফিস, হাজিদের আবাসনে তিন শিফটে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের প্রয়োজন এবং হারিয়ে যাওয়া হাজি, অসুস্থতা, দাফনসহ জটিল সেবা কার্যক্রমে মন্ত্রণালয়ের কর্মীদের উপস্থিতি জরুরি।
প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়, ইন্দোনেশিয়া যেখানে তাদের ২ লাখ ২১ হাজার হাজির জন্য ৪ হাজারের বেশি কর্মকর্তা পাঠিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ মাত্র ২৯৩ জন দিয়ে ৮৭ হাজার হাজিকে সেবা দিয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টার স্ত্রী ও দুই বোনকে সরকারি ব্যয়ে হজে পাঠানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয় জানায়, তারা নিজ খরচে হজ পালন করেছেন এবং টাকা জমার রসিদ মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত রয়েছে। তাদের মাহরাম না থাকায় ধর্ম উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে মাহরামের দায়িত্ব পালন করেন।
এ বিষয়ে বলা হয়, সরকারি ব্যয়ে সফরসঙ্গী না করা সংক্রান্ত নির্দেশনা রয়েছে ঠিকই, তবে সেটি ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য। এখানে সরকারি অর্থ খরচ হয়নি, বরং সংবাদে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে উপদেষ্টার ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জন্য ২ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব
প্রতিবাদে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের মন্তব্য নিয়েও আপত্তি জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বলা হয়েছে, তিনি যে সৌদি সরকারের হজ প্যাকেজে সব সেবা অন্তর্ভুক্ত থাকার কথা বলেছেন, তার কোনো প্রমাণ দেননি। বাস্তবতা হচ্ছে, হাজিদের নানা প্রয়োজনে বাংলাদেশ সরকারকে আলাদাভাবে তদারকি করতে হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দাবি, ২০২৫ সালের হজ ব্যবস্থাপনা ছিল অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি সুশৃঙ্খল। হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-সহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও গণমাধ্যম এবারের হজ ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করেছে।
পরিশেষে সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমগুলোকে ‘পেশাদারিত্ব বজায় রেখে, বস্তুনিষ্ঠ তথ্য যাচাই করে সংবাদ পরিবেশনের’ অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।