সম্পর্কের টানাপোড়েনে বাংলাদেশ নয়, ক্ষতির মুখে পড়বে ভারত!

৩ সপ্তাহ আগে
ভোগ্যপণ্য থেকে সুতা কিংবা প্রসাধনী থেকে পোশাক -- নিত্যপ্রয়োজনীয় এমন অনেক পণ্য আমদানিতে ভারতের ওপর বাংলাদেশ নির্ভরশীল। তবে চলমান সম্পর্কের টানাপোড়েনে বাংলাদেশ নয়, বরং প্রতিবেশী দেশটিই ক্ষতির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, বিশাল বাজার ছাড়তে চাইবে না ভারতের রফতানিকারকরা। অন্যদিকে বাংলাদেশের সামনে আছে বিকল্প, তাতে বাড়বে না আমদানি ব্যয়ও।

শিল্পের কাঁচামাল থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় আমদানির জন্য চীনের পর ভারতের ওপরই সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল বাংলাদেশ। আবার, ভারতের দিক থেকে বাংলাদেশ তাদের অন্যতম বৃহৎ রফতানি বাজার।

 

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারত থেকে প্রায় সাড়ে ৯শ কোটি ডলারের পণ্য আমদানির বিপরীতে বাংলাদেশ রফতানি করেছে প্রায় ২১৩ কোটি ডলার সমমূল্যের পণ্য। বড় অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতি বলছে, বাংলাদেশের বাজার ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

 

আরও পড়ুন: রাজস্ব বাড়াতে ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহ্বান এনবিআর চেয়ারম্যানের

 

বাংলাদেশের রফতানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প। এর সুতা আমদানির জন্য দেশটি ভারতের ওপর নির্ভরশীল। এ খাতের ব্যবসায়ীরা অবশ্য বলছেন, তাদের হাতে আছে বিকল্প উৎস। এতে বাড়বে না খরচ, শুধু দরকার নীতি সহায়তা।

 

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, সুতা আসে চীন থেকে। এক্ষেত্রে উজবেকিস্তানও আছে। তাই বিকল্প উৎস পেতে খুব একটা সমস্যা হবে না।

 

চূড়ান্তভাবে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক তলানিতে গেলে আলু ও পেঁয়াজ থেকে শুরু করে নিত্যপণ্যের বাজারের কী হবে? এমন শঙ্কা কাটাতে জার্মানি, মিশর, চীন, পাকিস্তান ও তুরস্কের দিকে হাঁটার চিন্তা করছে সরকার। এ খাতের ব্যবসায়ীরাও ছাড়তে চান ভারতমুখিতা।

 

শ্যামবাজারের আমদানিকারক শংকর চন্দ্র ঘোষ বলেন, ভারতের ডলার দরকার; বাংলাদেশের দরকার পণ্য। বাংলাদেশে বিক্রি না করলেও তারা অন্য দেশে ঠিকই বিক্রি করতে পারে। তবে কমাতে হবে ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা।

 

আরও পড়ুন: হাসিনার পতনের পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ-ভারত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক সোমবার

 

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের ভয় পাওয়ার কিছু নেই; এক্ষেত্রে চীন একটি ভালো বিকল্প। তবে একক দেশের ওপর নির্ভরশীলতার ঝুঁকি থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে। রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র‍্যাপিড) চেয়ারম্যান এম এ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পশ্চিমবঙ্গের অনেক ব্যবসায়ীর ব্যবসা-বাণিজ্য বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। পণ্যে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি ও নির্ভরশীলতা কমাতে আমদানি বাজারের পরিধি বাড়াতে হবে।

 

খাদ্যনিরাপত্তার জন্য স্থানীয়ভাবে উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি জ্বালানি ও তৈরি পোশাকের কাঁচামাল আমদানির বিকল্প উৎসগুলো নিশ্চিত করতে কৌশলগত বাণিজ্যনীতির পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন