সবসময় করা যায় এমন তিন জিকির

৩ সপ্তাহ আগে
মহান আল্লাহ জিন ও মানুষ সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তার ইবাদতের জন্যে। তাই তো মানুষের উচিত সবসময় মহান আল্লাহর ইবাদতে মত্ত থাকা। হেলায়-ফেলায় সময় নষ্ট না করা।

জিকির মানে মহান আল্লাহর স্মরণ। জিকির সবচেয়ে বড় ও সর্বোত্তম ইবাদত। কেননা, মহান আল্লাহর স্মরণই হচ্ছে যাবতীয় ইবাদতের প্রধান ও অন্যতম লক্ষ্য। দিনের সমসময় করা যায় এমন তিনি জিকির হচ্ছে-–

 

বেশি বেশি ইস্তিগফার পাঠ করা

 

দিনের সবসময় ইস্তিগফার পাঠ করা যায়। ইস্তিগফার পাঠে বান্দার অভাব মোচন হয়। পাপাচার ক্ষমা করা হয়। সন্তান-সন্ততির অভাব থাকে না– রিজিকেও আসে পরিপূর্ণ বরকত। অভাবমুক্ত থাকতে পবিত্র কোরআনে বেশি বেশি ইস্তিগফার পাঠের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যার ফলে মহান আল্লাহ মানুষকে উত্তম রিজিকসহ অসংখ্য নেয়ামতে ধন্য করবেন বলেও জানিয়েছেন। মহান আল্লাহ বলেন,

 

فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّاراً*يُرْسِلِ السَّمَاءَ عَلَيْكُمْ مِدْرَاراً*وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَلْ لَكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَلْ لَكُمْ أَنْهَاراً

 

অর্থ: অতঃপর বলেছি-– তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দেবেন। তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্য নদী-নালা প্রবাহিত করবেন। (সুরা নুহ, আয়াত : ১০-১২)

 

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-এর বিবরণে আছে রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তিগফার করবে; মহান আল্লাহ সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ১,৫১৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩,৮১৯; মুস্তাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২৯১, হাদিস: ৭,৬৭৭)

 

আরও পড়ুন: ডালিম নিয়ে পবিত্র কোরআনে যা বলা হয়েছে


নবীজির ওপর দরুদ পাঠ করা

 

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ দরুদ পাঠ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন,

 

اِنَّ اللّٰهَ وَ مَلٰٓئِکَتَهٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡهِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا

 

অর্থ: নিঃসন্দেহে আল্লাহ ও তার ফেরেশতারা নবীর ওপর দরুদ পাঠান, হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, তোমরাও নবীর ওপর দরুদ পাঠাতে থাকো এবং উত্তম অভিবাদন (সালাম) পেশ করো।’ (সুরা আহজাব, আয়াত: ৫৬)

 

আল্লাহ তাআলার এই নির্দেশ একদিকে যেমন আল্লাহর কাছে তার রাসুলের মর্যাদার প্রমাণ অন্যদিকে মুমিন বান্দার রহমত, বরকত ও অবারিত কল্যাণ লাভের অন্যতম উপায়।

 

হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, একবার রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর জিকিরের খুব তাকিদ করলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি আপনার প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করে থাকি। আমি আমার দোয়ার কতভাগ আপনার জন্য নির্ধারণ করব? তিনি বললেন, তোমার যে পরিমাণ ইচ্ছা। আমি বললাম, চার ভাগের এক ভাগ? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা। তবে বেশি করলে আরও ভালো। আমি বললাম, তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা। তবে বেশি করলে আরও ভালো। আমি বললাম, তাহলে তিন ভাগের দুই ভাগ? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা হয়। তবে বেশি করলে আরও ভালো। আমি বললাম, তাহলে কি আমার দোয়ার পুরোটাই হবে আপনার প্রতি দরুদ? তিনি বললেন, তবে তো তোমার উদ্দেশ্য অর্জন হবে, তোমার গুনাহ মাফ করা হবে।’ (তিরমিজি: ২/৭২)

 

আরও পড়ুন: মৃতদের ঈসালে সওয়াবের ৩ পদ্ধতি


সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহর জিকির করা

 

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাছের একটি ডাল ধরে ঝাঁকি দিলেন, কোনো পাতা পড়ল না। তিনি আবার ঝাঁকি দিলেন; এবারও কোনো পাতা পড়ল না। তবে তৃতীয়বার ঝাঁকি দেয়ার পর অনেক পাতা ঝরল। তখন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, 

 

নিশ্চয় সুবহানাল্লাহ, আলহামদু লিল্লাহ, লা-ইলা-হা ইল্লাহ ও আল্লাহু আকবার বলা বান্দার গুনাহ ঝরিয়ে দেয়, যেমন (শীতকালে) গাছ তার পাতা ঝরায়। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ১২৫৩৪)
জিকিরগুলো হলো:

 

এক. سُبْحَانَ اللَّهِ  : সুবহানাল্লাহ : আর আল্লাহ তাআলা অতি পবিত্র।

দুই. اَلْحَمْدَ لِلَّهِ  : আলহামদুলিল্লাহ : সব প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য।

তিন. لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ  : লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু : আর আল্লাহ তাআলা ছাড়া সত্য কোনো মাবুদ নেই।

চার. وَاللَّهُ أَكْبَرُ : ওয়াল্লাহু আকবার : এবং তিনি অতি মহান।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন