মঙ্গলবার (৬ মে) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খানের সই করা বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন: নিহত নাজিম উদ্দিনের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (৪২), ছোট ভাই জসিম উদ্দিন (৫২) ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আবুল কালাম (৪৭)।
জানা যায়, ২০১৬ সালের শেষদিকে ছেলে নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে দেশে চলে আসেন নিহত নাজিম উদ্দিন। ২০১৭ সালের মে মাসে দুপুর ১২টার দিকে মুদি বাজার করা ও বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নেয়াকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে নাজিম উদ্দিন তার স্ত্রীকে থাপ্পড় মারলে স্ত্রী নাছিমা আক্তার পেছনে সরে গিয়ে স্বামীকে দুই হাত দিয়ে সজোরে ধাক্কা মারেন। এতে দরজার চৌকাঠের লোহায় মাথা লেগে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নাজিম উদ্দিন।
স্বামীর হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেছে নিশ্চিত হয়ে নাছিমা আক্তার কাউকে কিছু না জানিয়ে মরদেহ ঘরের এক কোণে মালামাল ও মুরগির খাবার রাখার জায়গায় কম্বল ও তোশক দিয়ে মুড়িয়ে রাখেন।
সাত দিন পর নাছিমা আক্তার দেবর জসিম উদ্দিন ও অটোরিকশাচালক আবুল কালামের সহায়তায় নাজিম উদ্দিনের মরদেহ বস্তায় ভরে বসতবাড়ির অদূরে দক্ষিণ সর্ত্বা এলাকার ফজল করিম মেম্বারের মজা পুকুরে ফেলে দেন।
আরও পড়ুন: প্রতিশোধ নিতেই হত্যা, ক্লুলেস মামলার রহস্য উদ্ঘাটন
দু-মাস পর বস্তা ছিঁড়ে মানুষের হাড় বেরিয়ে এলে পুলিশ অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে এবং সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। কেউ শনাক্ত করতে না পারায় বেওয়ারিশ হিসেবে মরদেহটি দাফন করা হয়।
এদিকে মরদেহ উদ্ধারের পর নাজিম উদ্দিনের নিখোঁজে ভাই জসিম উদ্দিনের রাউজান থানায় করা সাধারণ ডায়েরির (জিডি) সূত্র ধরে সিআইডি জসিম উদ্দিন, নাজিম উদ্দিনের স্ত্রী নাছিমা আক্তার এবং মেয়ে ইসরাত জাহানের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে। ডিএনএ পরীক্ষায় অজ্ঞাতনামা মরদেহটি নাজিম উদ্দিনের বলে শনাক্ত হয়।
তকে কে বা কারা ঠিক কী কারণে নাজিম উদ্দিনকে হত্যা করেছে তার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়নি। সম্প্রতি সিআইডি এ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করে এবং স্ত্রী নাছিমা আক্তার ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন।
উল্লেখ্য, নাজিম উদ্দিনের নিখোঁজ ছেলের ব্যাপারে এখনও কোনো তথ্য জানা যায়নি কিংবা নিখোঁজের পরিবার কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।