শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি। তবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় ও গণভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা কাটেনি। তাই সনদে সব দলের সই করা নিয়েও আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
চব্বিশের দীর্ঘতম মাস জুলাইয়ের রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরই দাবি ওঠে পুরো কাঠামো আমূল সংস্কারের। রাষ্ট্রীয় সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয় ১৫ ফেব্রুয়ারি। প্রথম পর্যায়ে চলতি বছরের ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৩২টি দল ও জোটের সঙ্গে কমিশনের মোট ৪৪টি বৈঠক হয়। যাতে ১৬৬টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ৬২টির বিষয়ে ঐক্য হয়। দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে সংবিধান সংশ্লিষ্ট মৌলিক ১৯টি সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়, যার ১০টিতেই নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।
ছয়টি সংস্কার কমিশনের যে ৮৪টি প্রস্তাব নিয়ে জুলাই জাতীয় সনদ, তার মধ্যে ৪৭টি বিষয়কে ‘সংবিধান সংশোধন সাপেক্ষে সংস্কার’ এবং বাকি ৩৭টি বিষয়কে ‘আইন/অধ্যাদেশ, বিধি ও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সংস্কার’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ঐকমত্য কমিশন। জুলাই সনদের পটভূমি ব্যাখ্যা করে সংস্কারযজ্ঞ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম তুলে ধরার পর সংস্কারের ৮৪ দফা তুলে ধরা হয়েছে ৪০ পৃষ্ঠার সনদে।
আরও পড়ুন: জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে না এনসিপি
গত ৩১ জুলাই সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ হয়। কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরে ঐকমত্য কমিশন সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলো ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে। ৯ অক্টোবর এই আলোচনা শেষ হয়। আলোচনায় গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নে ঐকমত্য হয়।
তবে বিপত্তি বেধেছে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে। এ নিয়ে ছয়টি বৈঠকেও সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি কমিশন। গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই জাতীয় সনদের যে চূড়ান্ত কপি পাঠিয়েছে, তার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবে অধিকাংশ দলই একমত হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রস্তাবের বিষয়ে ভিন্নমত রয়ে গেছে। জুলাই জাতীয় সনদে সেগুলো যুক্ত করা হয়েছে ‘নোট অব ডিসেন্ট’সহ।
এই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, সেই বিষয়ে আলাদা করে কোনো সুপারিশের কথা উল্লেখ করা হয়নি জুলাই সনদে। যদিও জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় বলা হয়েছে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত যেসব সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো কোনো প্রকার কালক্ষেপণ না করে দ্রুততম সময়েই বাস্তবায়ন করবে অন্তর্বর্তী সরকার।
আরও পড়ুন: জুলাই সনদ স্বাক্ষর: দেশবাসীকে যুক্ত হতে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
সনদ স্বাক্ষরের আগে চূড়ান্ত ঐকমত্যে পৌঁছাতে বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ‘অতি জরুরি’ বৈঠক ডাকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি এই কমিশনের প্রধান। শুক্রবার রাজনৈতিক দলগুলো উৎসবমুখর পরিবেশে জুলাই সনদ স্বাক্ষর করবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
কিন্তু সনদ স্বাক্ষরের অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অন্যথায় তারা স্বাক্ষর করবে না বলে জানিয়েছে। নির্বাচনের আগেই গণভোট এবং পিআর পদ্ধতি নিয়ে অনড় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ সমমনা দলগুলো। তবে সনদ স্বাক্ষর করার ইঙ্গিত দিয়েছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো।
]]>
১ সপ্তাহে আগে
৬








Bengali (BD) ·
English (US) ·