অ্যাক্সিডেন্টাল ক্যাপ্টেন থেকে প্যাট কামিন্স এখন বিশ্বসেরা ক্যাপ্টেন। তার অধীনে সম্ভাব্য সবকিছুই জেতা শেষ অজিদের। গত ১০ বছর যে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিটা ভারত নিজেদের করে নিয়েছিল, সেটিও অস্ট্রেলিয়ায় ফিরিয়েছেন তিনি। বল হাতে তো প্রজন্মের অন্যতম সেরা তিনি, ব্যাট হাতেও প্রয়োজনের মুহূর্তে জ্বলে উঠেন নিয়মিতই। এমন কমপ্লিট প্যাকেজকে ছাড়া মাঠে নামতে কে চায় বলুন!
কিন্তু এবার হয়ত লাল বলের পরীক্ষায় অস্ট্রেলিয়াকে নামতে হচ্ছে অধিনায়ক কামিন্সকে ছাড়াই। চলতি মাসেই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই চক্রে শেষ সিরিজ খেলতে নামছে অস্ট্রেলিয়া। আগামী ২৯ জানুয়ারি গলে শুরু হবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টটি। এই সিরিজে কামিন্সকে ছাড়াই খেলতে হতে পারে অজিদের। অন্তত এখন পর্যন্ত এমন ইঙ্গিতই মিলেছে।
সিডনি টেস্টে ৬ উইকেটের বড় জয়ে ভারতকে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের মাধ্যমে এই মুহূর্তে লাল বলের সেরা আট দলের প্রতিটির সঙ্গে খেলা সিরিজের ট্রফি অস্ট্রেলিয়ার দখলে এলো। অ্যাশেজ, ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির মর্যাদাপূর্ণ শিরোপাও হাতে তুললেন ক্যাপ্টেন কামিন্স। এই মুহূর্তে ক্রিকেট থেকে কিছুটা দূরে থাকতে চাইছেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রত্যাবর্তনে রশিদের ১০ উইকেট, তবুও হাতছাড়া ফিফটির রেকর্ড
কামিন্স যে শ্রীলঙ্কা সিরিজে খেলতে ইচ্ছুক নন তার ইঙ্গিত গত রোববারই (৫ ডিসেম্বর) দিয়েছেন। মূলত পারিবারিক কারণে এই সিরিজের দল থেকে ছুটি প্রত্যাশা করছেন তিনি। কামিন্স এবং তার স্ত্রী এই মুহূর্তে সন্তানের আগমনের অপেক্ষা করছেন। সন্তান জন্মদানের সময় স্ত্রীর পাশে থাকতে চান এই পেস তারকা।
শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা সফরে না গেলে ২০২২ সালে টিম পেইনের কাছ থেকে অধিনায়কত্ব বুঝে পাওয়ার পর এই প্রথমবার কোনো সিরিজ মিস করতে চলেছেন কামিন্স।
কামিন্সের অবর্তমানে শ্রীলঙ্কায় অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিতে পারেন স্টিভ স্মিথ। গত দুই বছরে কামিন্সের অবর্তমানে বিভিন্ন সময়ে চারটি টেস্টে অধিনায়ত্ব করেছেন স্মিথ। তবে পূর্ণকালীন অধিনায়কের দায়িত্ব সহসাই ছাড়ছেন না কামিন্স।
কামিন্স বলেন, 'প্রথমত, আমি আমার কাজ চুটিয়ে উপভোগ করি। এটা টেস্ট ক্রিকেট খেলতে এবং এই দল, সাপোর্টিং স্টাফদের সঙ্গে কাজ করতে আমায় সবচেয়ে বেশি তাড়না দেয়। আমি এটার সবকিছুই ভালোবসি, এটা ভীষণ মজার। আমি যদি আরও কিছুদিন এটা (অধিনায়কত্ব) করতে পারি, আরও ভালোভাবে।'
আরও পড়ুন: প্রথম ইনিংসে দু’শো করতে না পারা পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিরোধ
তবে খুব শিগগিরই ট্রাঞ্জিশন পিরিয়ডে পা রাখবে অস্ট্রেলিয়া। সিডনিতে পঞ্চম টেস্টের একাদশে শুধু স্যাম কনস্টাসের বয়সই ৩০ এর নিচে ছিল। অধিনায়ক কামিন্সের বয়সও ৩১ পেরিয়ে গেছে। তবে এসব নিয়ে চিন্তা করছেন না তিনি। বরং আগামী কয়েক বছরে বড় সিরিজগুলোর দিকেই লক্ষ্য তার, বিশেষ করে ২০২৭ সালের দিকে। সে বছর ভারত ও ইংল্যান্ড সফরে যাবে অস্ট্রেলিয়া।
কামিন্স বলেন, 'আপনারা সবসময় এটা (উত্তরাধিকারী) নিয়েই বলেন। আমাদের দুজন সহকারী অধিনায়ক আছেন। এই সিরিজে আমরা তিনজনের অভিষেক ঘটিয়েছি। আপনাকে সবসময় উপস্থিত এবং বর্তমানের কথা ভাবতে হবে, তবে ভবিষ্যতের দিকেও একটু চোখ রাখতে হবে।'
'আমরা সবসময় এই আলাপই করি, কিন্তু আমি মনে করি না যে শুধুমাত্র করার জন্য কিছু করা উচিত। সেগুলো আগামী কয়েক বছরে নিজে থেকেই ঘটতে পারে।'