যারা স্বদেশব্রতের মহামন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে নিজের জীবনকে তুচ্ছজ্ঞান করেছিলেন, সেই মৃত্যুঞ্জয়ীদের চরণ চুম্বনের সৌভাগ্য না হলেও হৃদয়ের সবটুকু আবেগ, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা উজাড় করে দিয়ে এই স্মরণোৎসবে শামিল হয়েছে পুরো জাতি।
ভোরের আলো ফোঁটার পরপরই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপরেই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধার অংশ হিসেবে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারাও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই শ্রদ্ধায় অংশ নেন।
এরপর রাজধানীর রায়ের বাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ। সূর্য সন্তানদের ঋণ শোধ করা না গেলেও তাদের আদর্শ ধারণ করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় সবার কণ্ঠে ।
রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে আসা এক নারী জানান, ব্যক্তিগত শ্রদ্ধার জায়গা ওনাদের জন্য, সেটা প্রকাশ এবং পরবর্তী প্রজন্মকে পরিচিত করতে হবে।
তরুণরা বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ত্যাগের প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে বাঙালি সময়ের প্রয়োজনে অন্যায়ের বিরুদ্ধে জারি প্রতিবাদ-প্রতিরোধ। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে তারই প্রমাণ।
৫৩ বছরেও মুক্তবুদ্ধির চর্চার পথ এখনো বন্ধুর হওয়ায় অনেকের অভিযোগ অনুযোগ থাকলেও সংস্কৃতিকর্মীসহ অনেকেই স্বপ্ন দেখেন সাম্য ও মানবিক মর্যাদার বাংলাদেশের।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে বিভাজনের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে এসে পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।
মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির কথা জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীদের চেতনা ও আদর্শকে ভূলুণ্ঠিত হতে দেয়া যাবে না।’
]]>