সম্প্রতি ইব্রাহিমের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যা দেখে অনেকেই ভুলে তাকে শাহরুখ মনে করেছেন। তবে যেই ইব্রাহিমকে নিয়ে এত আলোচনা সামাজিক মাধ্যমে, সেই কি না দেখা করতে চান না কিং খানের সঙ্গে।
দ্য লালানটপকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইব্রাহিম স্পষ্ট করেছেন, তিনি কখনও শাহরুখের সঙ্গে দেখা করতে চান না।
তিনি বলেন, “আমি অনেকবার বলেছি, কোনও কারণে আমি তার সঙ্গে দেখা করতে চাই না। কারণ, ঠিক যেমন আমাদের একটি বাংলো বা ফেরারি থাকার স্বপ্ন থাকে—যখন তা আসে, সেটা গ্যারেজে থাকে, আর আমরা অন্য গাড়ি নিয়ে বের হয়ে পড়ি। আমারও একই চিন্তা, যদি আমি তার সঙ্গে দেখা করি, আমার সকল উৎসাহ উধাও হয়ে যেতে পারে। আমি সেই ভয়টাই পাই।”
ইব্রাহিম মূলত ভিডিও বানান এবং শাহরুখের সংলাপ, দৃশ্য এবং হাঁটার ধরণ অনুকরণ করেন। তিনি শাহরুখের মতো পোজ দিয়ে ছবি শেয়ার করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নায়কের প্রায় ২৩ লাখ ফলোয়ার রয়েছে। যে কারণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হন এবং কিং খানের অনুকরণ করে ভক্তদের মুগ্ধ করেন।
আরও পড়ুন: পদ্মাবত-ছাভাকে ছাড়িয়ে গেল ‘সাইয়ারা’!
২০১৭ সালে শাহরুখ খানের ‘রইস’ ছবি মুক্তি পাওয়ার পরেই ইব্রাহিম শাহরুখের সঙ্গে চেহারার মিলের দিকটা কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন। তার কথায়, “আগে থেকেই আমার ‘রইস’-এর মতো গোঁফ-দাড়ি ছিল। তাই মানুষ যখন আমাকে দেখেন, তখন তারা পাগল হয়ে উঠেছিলেন। সেই সময়ই সোশ্যাল মিডিয়া আমাকে পরিচিতি দেয়, তখন ফলোয়ারও বাড়তে থাকে। আমি পার্টি অথবা কোনও জনবহুল স্থানে গেলে মানুষ চেঁচামেচি করতেন, আনন্দে কেঁদে ফেলতেন এবং আমাকে টানাটানি পর্যন্তও করতেন।”
একটি বিষয় তার দৃষ্টিভঙ্গি চিরতরে বদলে দিয়েছিল বলে জানালেন ইব্রাহিম। সেটা ঘটেছিল রাজকোটের খান্ধেরি স্টেডিয়ামে। তার কথায়, “আমি ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলাম। ওরা চিৎকার করতে শুরু করেন, কাঁদছিলেন, আমাকে টানছিলেন। প্রায় ২ ঘণ্টা আমি আটকে ছিলাম। ভয়ও পেয়ে গিয়েছিলাম। শ্বাস পর্যন্ত নিতে পারছিলাম না। আমাকে উদ্ধারের জন্য পুলিশকে আসতে হয়েছিল। এরপরে আমি অনুভব করি যে, এটা অনেক বড় বিষয়। যদি এতজন অচেনা মানুষ এভাবে প্রতিক্রিয়া দেন, তাহলে নিশ্চয়ই বিশেষ কিছু রয়েছে।”
ইব্রাহিম বলেন, “আমি আমার শরীরের গঠন, স্টাইলিং এমনকী নাচের শৈলী নিয়ে কাজ শুরু করে দিই। আমি তখনও জানতাম না, কীভাবে নাচ করতে হয়! কিন্তু আমি এসআরকে-র ছবি দেখতে শুরু করি। শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য নয়, এর পাশাপাশি ট্রেনিংয়ের জন্যও তা দেখতে থাকি। মানুষ আমায় যেভাবে দেখছেন, সেটা সত্যি করতেই হত আমায়।”
আরও পড়ুন: থ্রি ইডিয়টস সিনেমার ‘৫ সেপ্টেম্বর’ দৃশ্যটি ভাইরাল কেন?
ইব্রাহিমকে ‘ডুপ্লিকেট’, ‘লুকঅ্যালাইক’, ‘কপিক্যাট’-এর মতো কথাও শুনতে হয়েছে। তবে তা থেকে পিছিয়ে আসেননি তিনি। জানান যে, “প্রথম দিকে আঘাত পেয়েছি। এখন আমি মনে করি যে, কপি করাটাও একটা শিল্প। প্রত্যেকটা পেশাই অন্যদের দ্বারা অনুপ্রাণিত। সারা বিশ্বই কপির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেটাকেই আমরা গুরুত্ব দিয়ে গ্রহণ করেছি।”
তবে একটা সূক্ষ্ম রেখা টেনে ইব্রাহিম বলেন, “আমি কোনো সস্তার ভার্সন নই। আমি ২ টাকার মাস্ক নই। আমি একটা মানদণ্ড তৈরি করেছি। এর আগে এক-একটা অনুষ্ঠানের জন্য এসআরকে-র ডুপ্লিকেটরা ২০০০ থেকে ৫০০০ টাকা চার্জ করতেন। এমনকি আজ তারা পাচ্ছেন ১০০০০-১৫০০০ টাকা। কারণ আমি এই মানদণ্ডকে বাড়িয়েছি। এখন আমি প্রত্যেক অনুষ্ঠানের জন্য দেড় থেকে আড়াই লাখ টাকা চার্জ করি। আর মানুষ আনন্দের সঙ্গে সেটি দেন।”
]]>