শাহ আরেফিন টিলায় পাথর লুটের মহোৎসব, বিপন্ন পর্যটন ও ঐতিহ্য

২ সপ্তাহ আগে
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে অবৈধ পাথর উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ হচ্ছে না। সম্প্রতি সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে ব্যাপক অভিযান চালানোর পরও শাহ আরেফিন টিলা এলাকায় আবারও শুরু হয়েছে পাথর লুটের মহোৎসব।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্থানীয় সূত্র জানায়, ‘পাথরের খনি’খ্যাত শাহ আরেফিন টিলার প্রায় ৮৫ শতাংশ অংশ এরই মধ্যে লুট হয়ে গেছে। প্রশাসনের অভিযানের মধ্যেই টিলা কেটে পাথর সরানো চলছে বেপরোয়া গতিতে।

 

এর আগে গত বুধবার গভীর রাতে ও বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে পৃথক অভিযানে মোট পাঁচটি যানবাহন-চারটি ট্রলিজাতীয় যান ও একটি ট্রাক পাথরসহ জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা পলাশ তালুকদারের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালানো হয়। ওই সময় শাহ আরেফিন টিলার পাথরভর্তি চারটি ট্রলি হেফাজতে নেয়া হয়। চালকেরা গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান। অভিযানে কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ সহযোগিতা করে।

 

এছাড়া বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে তল্লাশিচৌকিতে একটি ট্রাকভর্তি পাথর জব্দ করা হয়। ট্রাকচালক পালিয়ে যান। উদ্ধার করা পাথর উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পুলিশের জিম্মায় রাখা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন: সাদা পাথরখেকোদের দখলে পর্যটন করপোরেশনের ৫০ একর জমি, ট্যুরিজম বোর্ডের প্রাচীর গায়েব

 

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি মো. রতন শেখ) বলেন, আটক করা গাড়িগুলো শাহ আরেফিন টিলা থেকে অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর বহন করছিল। এগুলো পুলিশের জিম্মায় রাখা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পাথর জব্দের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’

 

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সরকারি খাস খতিয়ানের ১৩৭ দশমিক ৫০ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত শাহ আরেফিন টিলা। প্রায় ৭০০ বছর আগে হজরত শাহজালাল (রহ.)–এর সফরসঙ্গী হজরত শাহ আরেফিন (রহ.) এখানে অবস্থান করেছিলেন। তার নামেই টিলাটির নামকরণ করা হয়েছে। তবে এখন সেই ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের প্রতীক টিলাটি অবৈধ পাথর উত্তোলনের কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

 

সম্প্রতি সাদাপাথর এলাকায় পাথর লুটের ঘটনায় প্রশাসন ২৪ ঘণ্টা পুলিশি তল্লাশিচৌকি বসিয়ে অভিযান চালিয়েছিল। কিন্তু নজরদারি শিথিল হতেই ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে অবৈধ পাথর ব্যবসায়ী চক্র। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এইভাবে পাথর লুট চলতে থাকলে শুধু শাহ আরেফিন টিলা নয়, সিলেটের প্রাকৃতিক ঐতিহ্য ও পরিবেশই মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন