বৃহস্পতিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. নাছিরুজ্জামানের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. মোহাম্মদ নূরুজ্জামানকে তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয়। জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. মো. আবুল হোসেনকে সদস্য ও আবাসিক চিকিৎসক (মেডিসিন) ডা. মোহাম্মদ আবেদুর রহমান ভূঞাকে সদস্য সচিব করা হয়। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
গত সোমবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকালে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীকে লাথি মেরে আহত করেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ।
এ ঘটনার সময় টিভিতে সংবাদ প্রকাশ হলে তীব্র নিন্দার ঝড় ওঠে। অভিযুক্ত চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় দেশজুড়ে।
আরও পড়ুন: হার্টের রোগীকে ‘লাথি মেরে’ আহত করলেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক!
অভিযুক্ত চিকিৎসক মাহবুব আলম মিলন শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত। অপরদিকে ভুক্তভোগী মো. মহসিন কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বত্রিশ এলাকার বাসিন্দা।
হাসপাতালের পরিচালক স্বাক্ষরিত এক পত্রে বলা হয়েছে, কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা মো. মহসিন মিয়া নামে এক রোগীকে শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠে জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মাহবুবুল আলম মিলনের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে ভোক্তভোগীর ছেলে মো. শোলক মিয়া লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. নাছিরুজ্জামান বলেন, তদন্ত রিপোর্টে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত ডাক্তারের বিরুদ্ধে প্রচলিত বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ, জানা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে কিশোরগঞ্জ শহরের বত্রিশ এলাকার বাসিন্দা মো. মহসিন (৬৫) চিকিৎসা নিতে যান হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। এসময় তার স্বজনরা কর্তব্যরত চিকিৎসকদের জানান, মহসিন কয়েকদিন আগে একই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেদিন তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় আবার ভর্তি করার অনুরোধ জানানো হয়। তবে জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক মাহবুব আলম মিলন রোগীকে ভর্তি না করিয়ে শহরের একটি ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেন। এ নিয়ে রোগীর পরিবারের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু হলে ডাক্তার অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন মহসিনের স্ত্রী, মেয়ে ও ভাতিজিকে। এসময় রোগী ‘তুমি মুখ খারাপ করছ কেন?’ বলার পরপরই ডাক্তার মিলন চেয়ার থেকে উঠে এসে সজোরে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেন।
আরও পড়ুন: একসঙ্গে ৩ সন্তানের জন্ম দিলেন জোনাকি
পরে রোগীর স্বজন ও কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন। ডাক্তারের লাথিতে রোগীর বাম উড়ুতে রক্তাক্ত জখম হয়েছে। পরে তাকে নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বিকালে মহসিনের ছেলে মো. শোলক বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।