শরীয়তপুরে বাড়ছে পদ্মার ভাঙন, কাজে আসেনি ৩৫ কোটি টাকার জিওব্যাগ ডাম্পিং

১ সপ্তাহে আগে
গত দুই মাসে শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মার ভাঙনে তীররক্ষা বাঁধের দুই কিলোমিটার অংশ ধসে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে ৫ লাখ ২৪ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হলেও কোনো কাজে আসেনি। এতে গৃহহীন দেড় শতাধিক পরিবার। তবে, নতুন জরিপ অনুযায়ী ডিপিপি সংশোধন করে বাঁধ নির্মাণের কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের পৈলান মোল্যাকান্দি। কয়েক দিন আগেও এই এলাকায় ছিলো রাস্তাঘাট, হাটবাজার, বসতবাড়িসহ নানা স্থাপনায় ভরপুর। তবে গত কয়েক দিনের ভাঙনে এই এলাকায় পাল্টে গেছে পুরো দৃশ্যপট। এখানকার চিত্র এখন অনেকটা যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার মতো।

 

নদীভাঙ্গন কবলে রাস্তাঘাট, বসতভিটা, যত্রতত্র পড়ে আছে বৈদ্যুতিক খুঁটি; সরিয়ে নেয়া হয়েছে অনেক ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠানসহ ঘরবাড়ি। গত ২ মাসে গৃহহীন হয়েছে অন্তত ১৫০ টি পরিবার। এদিকে নতুন করে ভাঙনের আতঙ্কে রয়েছে পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানসহ ১ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

 

ভাঙনের কারণে এলাকা ছেড়েছে অনেক শিক্ষার্থী। ফলে পৈলান মোল্লার কান্দি ইয়াসিন মাদবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৫০ শিক্ষার্থীর স্থানে এখন রয়েছে মাত্র ৬৫ জন। তাও বিদ্যালয়টি এখন ভাঙন ঝুঁকিতে।

 

আরও পড়ুন: পদ্মায় বালুখেকোদের রাজত্ব, ভাঙনে নিঃস্ব হাজারো পরিবার

 

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, বিদ্যালয়টি একসময় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে সরগরম ছিল। গত ২ মাসে নদী ভাঙনের কারণে বাড়িঘর নিয়ে অনেকেই চলে গেছে অন্য কোনো এলাকায়। ফলে এখন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি একেবারেই শূন্যের কোটায়। ৩৫০ জন শিক্ষার্থীর স্থানে এখন রয়েছে মাত্র ৬৫ জন। তা ছাড়া বিদ্যালয়টি চলে এসেছে নদীর পাড়ে। যেভাবে নদী ভাঙছে স্কুলটিও যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

 

এদিকে ভাঙন রোধে উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের জিরোপয়েন্ট এলাকা থেকে জাজিরা ইউনিয়নের পাথালিয়াকান্দি এলাকা পর্যন্ত ৮ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার স্থায়ী নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। নির্মাণ কাজে নিযুক্ত থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ লাখ ২৪ হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ নদীতে ফেললেও ভাঙনে ওই জিও ব্যাগগুলো নদী গর্ভে চলে গেছে। তাছাড়াও নদীর পাড়ে রাখা কংক্রিটের ব্লগ গুলো নদীভাঙনের শিকার হয়ে চলে যাচ্ছে নদী গর্ভে।

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, দ্রুত সময়ের মধ্যে তীর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করতে না পারায় হয়েছে এমন দশা। তাই ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি তাদের।

 

এ বিষয়ে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, ভাঙনের ফলে নদীর চিত্র অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। তাই ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ চিহ্নিত করে ডিজাইন অনুযায়ী নতুন সার্ভে অনুযায়ী ডিপিপি সংশোধন করে বাঁধ নির্মাণের জন্য আমরা দ্রুত প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। বর্তমানে ৮ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার পদ্মার ডান তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৬০ কোটি টাকা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন