শত কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নিয়ে বিপাকে চট্টগ্রাম কাস্টমস!

৩ সপ্তাহ আগে
ড্রেজিংয়ের জন্য বিদেশ থেকে আমদানি করা বিশাল আকৃতির দুই হাজার পাইপ এবং ৮ কনটেইনার যন্ত্রপাতি নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ। শত কোটি টাকা মূল্যের এসব পাইপ এবং ফিটিংস সামগ্রী ৬ বছরেও ছাড় করেনি আমদানিকারক। আবার আইনি জটিলতায় নিলামেও তুলতে পারছে না কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ৩ হাজার মেট্রিক টন ওজনের এসব পণ্য রাখা নিয়ে দেখা দিয়েছে স্থান সংকট।

ড্রেজিং কাজে ব্যবহারের জন্য ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর ২০ ফুট এবং ৪০ ফুট সাইজের ১ হাজার ৯০০টি পাইপ আমদানি করেছিল চ্যাঞ্জিং ড্রেজিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান। একই চালানে ছিল পাইপ ফিটিংসের নানা উপকরণসহ আরও ৮ কনটেইনার পণ্য। কিন্তু নতুনের পরিবর্তে ব্যবহৃত পাইপ আমদানি করায় পাইপগুলোর ডেলিভারি আটকে দেয় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ।

 

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন বলেন, অন্যান্য পণ্য স্বাভাবিকভাবে সরাসরি নিলামে তুলতে পারলেও পাইপগুলো নিলামে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিয়ে তারপর নিলামে তোলা হবে।

 

আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দর / খোলা শেডে পড়ে থাকা ২৯৭ গাড়ি নিয়ে বেকায়দায় শুল্ক বিভাগ!

 

এ অবস্থায় গত ৬ বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের শেডে পড়ে থাকা বিশাল আকৃতির এসব পাইপের এখন স্থান হচ্ছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের নিলাম শাখায়। প্রতিদিনই বিশাল আকৃতির লরিতে করে বন্দরের শেড থেকে পাইপ নিয়ে আসা হচ্ছে নিলাম শেডে।

 

অথচ ২০২০ সালেই নিলামে বিক্রি করতে এসব পাইপ বাই পেপার চট্টগ্রাম কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করেছিল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিশাল এই পাইপের চালানের পাশাপাশি পণ্য ভর্তি কনটেইনার রাখতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সরকারি দুইটি সংস্থাকেই।

 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, পাইপগুলো থাকার কারণে বন্দরে অন্যান্য মালামাল রাখতে অসুবিধা হচ্ছিল। এতে অন্য পণ্য রাখতে না পারায় ক্ষতি হচ্ছিল আর্থিকভাবেও। তাই পাইপগুলো কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন: কেমিক্যালসহ ৮০০ টন বিপজ্জনক পণ্য নিয়ে বিপাকে চট্টগ্রাম বন্দর

 

চীনে প্রস্তুত করা এসব পাইপ এবং ফিটিংস উপকরণ সিঙ্গাপুর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়েছিল। এ অবস্থায় নিলামে তোলার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ত্রুটি সংশোধনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ। তবে একাধিকবার চেষ্টা করেও এ নিয়ে আমদানিকারক কিংবা সি অ্যান্ড এফ প্রতিষ্ঠানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপ কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে পাইপগুলো নিলামে তোলার জন্য কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। তবে পাইপগুলোর আমদানির অনুমতি একটি সার্টিফাইড প্রতিষ্ঠানের নামে হওয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে এগুলো নিলামে তোলা হবে।

 

উল্লেখ্য, ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন ওজনের পাইপের আমদানিমূল্য ছিল ৮০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া ৮ কনটেইনার বোঝাই ৮৩ মেট্রিক টন ওজনের অন্যান্য পণ্যের দাম ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন