গেল ২৮ মার্চ ভূমিকম্পে মুহূর্তেই মাটির সঙ্গে মিশে যায় ব্যাংককের ৩৩তলা একটি ভবন। থাই প্রাদেশিক নিরীক্ষা অফিসের জন্যে নির্মাণাধীন ভবনটির দায়িত্বভার ছিল চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিয়ারিং গ্রুপ এবং ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির উপর। এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে নির্মাণে ব্যবহৃত পণ্যের মান নিয়েও, যা তদন্ত করে দেখছে থাই কর্তৃপক্ষ।
অভিযুক্ত দুটি প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পেও। পদ্মা সেতু নির্মাণে যুক্ত ছিল চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিয়ারিং গ্রুপের প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। আর মেট্ররেলের সঙ্গে যুক্ত আরেক অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি।
এর আগেও এমন অনেক প্রকল্পে বিদেশি নির্ভতার মাশুল গুনেছে বাংলাদেশ। সেই শঙ্কা মাথায় রেখে মেগা প্রকল্পগুলোতে অনিয়ম হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করছেন ভূমিকম্প বিশারদরা।
আরও পড়ুন: বরগুনায় ৩৫৭ লোহার সেতু ঝুঁকিপূর্ণ, ঘটছে দুর্ঘটনা
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক তাহমীদ মালিক আল হুসাইনী সময় সংবাদকে বলেন,
কলাম যত সরু এবং উচ্চ হবে, তার তত স্থিতিশীলতার প্রশ্ন আসে। যমুনা সেতুরও ডিজাইনে ত্রুটি ছিল। অন্য মেগা প্রকল্পে যে ডিজাইন ত্রুটি নেই, সেটা কী করে জানবো!
তবে ভূমিকম্পে দেশের বড় বড় অবকাঠামোর ক্ষতির খুব একটা শঙ্কা দেখছেন না বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে কাজ করা বুয়েটের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. খান মাহমুদ আমানত। তার মতে, বৈদেশিক দাতা সংস্থা এবং দেশীয় বিশেষজ্ঞদের তদারকি থাকায় কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন নেই।
বুয়েটের এই অধ্যাপকা বলেন,
একটি প্রকল্পের কাজ করার যোগ্যতা আছে কি-না, সেটা আগে সুনিশ্চিত করা হয়। তালিকা ছোট করার পর সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজটা দেয়া হয়। কাজেই ঠিকাদারদের যোগ্যতা নিয়ে বড় বড় প্রকল্পগুলোতে খুব একটা আপত্তির কিছু আছে বলে মনে হয় না। তবে বেসরকারি খাতে যেসব স্থাপনা হচ্ছে, বিশেষ করে সুউচ্চ ভবন যেগুলো হচ্ছে, সেগুলোর সবগুলোই যে ভূমিকম্প সহনশীল যথাযথভাবে ডিজাইন করা হয়েছে কি-না, সেটা দেখার অবকাশ আছে।
আরও পড়ুন: ধসে পড়ল আশুগঞ্জ স্টিল রাইস সাইলোর নির্মাণাধীন দুই টাওয়ার
বাংলাদেশে বছরে ৩৫টি মৃদু ভূমিকম্প একটি স্বাভাবিক ঘটনা মনে হলেও একে বড় ধরনের ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা হিসেবেও দেখছেন অনেকেই।
]]>