রোববার (৩ আগস্ট) সকালে বৃষ্টির মধ্যেই সিডনি হারবার ব্রিজে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। হাজার হাজার মানুষ এই মিছিলে অংশ নেন। পুলিশ জানিয়েছে, অন্তত ১ লাখ মানুষ মিছিল করেছেন। তবে আয়োজকদের দাবি, ব্রিজজুড়ে কমপক্ষে ৩ লাখ লোক উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভে লাখো কণ্ঠে একযোগে স্লোগান শোনা যায়, ‘আমরা সবাই ফিলিস্তিনি’। ‘এখনই যুদ্ধবিরতি চাই’ এবং ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত কর’ বলেও স্লোগান দেয়া হয়। বিক্ষোভের সময় অ্যাসাঞ্জের পাশে তার পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও নিউ সাউথ ওয়েলসের সাবেক নেতা বব কারকেও দেখা যায়।
মিছিলের আগে বক্তব্য দেন সিনেটর মেহরিন ফারুকি, আদিবাসী অভিনেত্রী মেইন ওয়াইট এবং সাবেক সকারু এবং খ্যাতনামা ফুটবল খেলোয়াড় ক্রেইগ ফস্টার। জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ মিছিলে অংশ নিলেও জনতার সামনে কোনো বক্তব্য দেননি। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলেননি তিনি।
মেহরিন ফারুকি বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেন, এই মিছিল ‘ইতিহাস সৃষ্টি করবে’। ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বানও জানান তিনি। মেহরিন ফারুকি অভিযোগ করেন, ইসরাইলি বাহিনী গাজাবাসীর ওপর ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইসরাইলি জিম্মির নতুন ভিডিও নিয়ে চাঞ্চল্য
এছাড়া তিনি নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য সরকারের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস মিন্সের সমালোচনা করেন। সম্প্রতি মিন্স বলেছিলেন, এই বিক্ষোভ-মিছিল করাটা ঠিক হবে না। অস্ট্রেলিয়ার লেবার পার্টির আইনপ্রণেতা এড হুসিক প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ সরকারকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আহ্বান জানান।
গাজায় অপুষ্টি ও খাদ্য সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ও সমালোচনা জোরালো হচ্ছে। এমন অবস্থায় সম্প্রতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স। যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো কোনো কোনো দেশ শর্তসাপেক্ষে স্বীকৃতি দেয়ার কথা বলেছে।
অস্ট্রেলিয়া সরকার গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধের জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। তবে তারা এখনও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তবে গত সপ্তাহে জাতিসংঘে এক সম্মেলনের পর আরও ১৪টি দেশের সঙ্গে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়া বলেছে, তারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে। দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পথে এটিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছে দেশটির সরকার।
আরও পড়ুন: অস্ত্র সমর্পণের খবর অস্বীকার হামাসের, উইটকফের গাজা সফরের নিন্দা
এদিকে গাজায় ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের মধ্যেই রোববার ৬৬৬তম দিনের মতো গাজাজুড়ে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এসব হামলায় একদিনের আরও ৪৪ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ২২ জনই ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে। মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার ৪৩০ জনে।