রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়ার প্রভাব কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ

৪ সপ্তাহ আগে
দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে মালয়েশিয়ার প্রভাব, বিশেষ করে আসিয়ান সভাপতি হিসেবে দেশটির ভূমিকা কাজে লাগাতে চাইছে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বেরনামাকে এক সাক্ষাৎকারে এমনটা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সম্প্রতি ড. ইউনূসের মালয়েশিয়া সফর শেষ হওয়ার আগে বেরনামাকে সাক্ষাৎকারটি দেন প্রধান উপদেষ্টা। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞতা ও আসিয়ানে নেতৃত্বপূর্ণ অবস্থান আঞ্চলিক সমস্যা সাধানে দেশটিকে এক অনন্য অবস্থানে নিয়ে এসেছে।

 

তার কথায়, 

আমরা আশা করছি, মালয়েশিয়া পুরো আলোচনায় (রোহিঙ্গা ইস্যুতে) তার প্রভাব কাজে লাগাবে যাতে আমরা এই সমস্যা সমাধান করতে পারি।

 

সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস আরও বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সরকারি বাহিনীর চলমান সংঘর্ষের কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। যা রোহিঙ্গাদের নতুন করে বাংলাদেশে পাড়ি জমাতে বাধ্য করছে।

 

প্রধান উপদেষ্টা জানান, গত ১৮ মাসে নতুন করে দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। তারা এরই মধ্যে দেশে থাকা ১২ লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ফলে সমস্যা ক্রমেই আরও জটিল হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা, যুক্তরাষ্ট্র তাদের (রোহিঙ্গা শরণার্থী) দেখভালের সব তহবিল বন্ধ করে দিয়েছে।’

 

আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির বন্ধনকে অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর : প্রধান উপদেষ্টা

 

ড. ইউনূস জানান, রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান খুঁজতে আগামী কয়েক মাসে তিনটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমটি হবে চলতি মাসের শেষের দিকে কক্সবাজারে। উচ্চস্তরের দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে এবং তৃতীয় সম্মেলনটি হবে বছরের শেষদিকে কাতারের দোহায়।

 

গত কয়েক বছর ধরে আলোচনা হলেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন উদ্যোগে খুব কমই অগ্রগতি হয়েছে। ২০২১ সাল থেকে মিয়ানমারে চলমান সশস্ত্র সংঘাতের কারণে এটি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। দীর্ঘস্থায়ী এ মানবিক সংকট শুধু বাংলাদেশকেই প্রভাবিত করছে না; বরং মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কয়েকটি আসিয়ান সদস্য দেশকে প্রভাবিত করছে।

 

মালয়েশিয়া ১৯৫১ সালের জাতিসংঘ শরণার্থী কনভেনশন বা ১৯৬৭ সালের প্রোটোকলের স্বাক্ষরকারী না হলেও মানবিক কারণে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সাময়িকভাবে আশ্রয় দিচ্ছে।

 

আরও পড়ুন: সিএনএ-কে ড. ইউনূস / বৈধ না হলে নির্বাচনের কোনো মানে নেই

 

রোহিঙ্গা সংকট বহু আগের হলেও ২০১৭ সালে তা চরম আকার ধারণ করে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। সেই অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আসেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন