রেডক্রিসেন্ট ফেনী ইউনিটের নির্বাচনে ৭ পদের পাঁচটিতেই বিএনপির জয়

১৮ ঘন্টা আগে
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ফেনী জেলা ইউনিটের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন জিয়া উদ্দিন আহমেদ মিস্টার। অন্যদিকে সেক্রেটারি পদে নির্বাচিত হয়েছেন সালাউদ্দিন মামুন। এর মাধ্যমে দীর্ঘ দেড় যুগ পর ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত কার্যকরী কমিটি পেয়েছে ফেনী জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট।

শনিবার (২২ নভেম্বর) জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের কার্যকরী কমিটির এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।


এদিন ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। নির্বাচনে মোট ১ হাজার ৬৩৮ জন ভোটারের মধ্যে ১ হাজার ১৫৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। যা মোট ভোটারের ৭০ দশমিক ৫৭ শতাংশ।


সন্ধ্যায় ভোট গণনা শুরু হয় এবং রাত ১২টায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসমাইল হোসেন ফলাফল ঘোষণা করেন।
ঘোষিত ফলাফলে মিস্টার-মামুন প্যানেল থেকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৪৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জিয়া উদ্দিন আহমেদ মিস্টার এবং সেক্রেটারি পদে ৫০৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন মামুন।


তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পিপুল-রশিদ প্যানেলের ভাইস চেয়ারম্যান পদে মুশফিকুর রহমান পিপুল পেয়েছেন ৪৮৩ ভোট, সেক্রেটারি প্রার্থী জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক রশিদ আহমেদ মজুমদার ৩৫৫ ভোট পেয়েছেন। এছাড়া সেক্রেটারি পদে জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আ ন ম আবদুর রহীম ২৩৩ ভোট ও ডা. সহিদ উল্ল্যাহ পেয়েছেন ২৩ ভোট।


নির্বাচনে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে পাঁচ পদের বিপরীতে ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী রাসেল পাটোয়ারী ৪৯০ ভোট, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক শরিফুল ইসলাম অপু ৩৩০ ভোট, জেলা ছাত্রদলের সদস্য মেজবাহ উদ্দিন মিয়াজী ৩২৩ ভোট, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক ওসমান গণি রাসেল ২৯৭ ভোট ও জেলা যুবদলের দপ্তরে নিয়োজিত সদস্য আল ইমরান ২৯৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।


আরও পড়ুন: দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সমন্বয় জরুরি: রেডক্রিসেন্ট


জয়ের পর নবনির্বাচিত সেক্রেটারি সালাউদ্দিন মামুন বলেন, ‘এ জয়ে আমরা অভিভূত। আগামীর পথচলায় সকলের সঙ্গে আলোচনা করে আত্মমানবতার সেবায় কাজ করব।’


এর আগে, এ নির্বাচনে ৪২ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও ৩৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। পরবর্তী ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত নেতা মেজবাহ উদ্দিন সাঈদ, সদস্য পদে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন ও এনসিপির সংগঠক আবদুল্লাহ আল জোবায়ের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।


এদিকে সকাল থেকে ভোট উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছিল নিদ্রিত ১৬ বছরের ক্লান্ত ফেনী শহর। জনপদে দীর্ঘ সময়ের নিস্তব্ধতা ভেঙে ফিরে আসে নির্বাচনী আমেজের রঙিন হাওয়া। সিলেকশনের ছায়ায় ভোটের উৎসব ভুলে গিয়ে বহুদিন ধরে ‘ফেনী স্টাইল নির্বাচন’ নামে যে তকমায় ঢেকে ছিল জনপদ, এ নির্বাচনের মাধ্যমে ফেনী যেন আবারও নিজের গণতান্ত্রিক পরিচয়কে খুঁজে পেয়েছে নবজাগরণের ছোঁয়ায়।


একরামুল হক নামে এক ভোটার বলেন, ‘দীর্ঘদিনের স্থবিরতা শেষে এই ভোটউৎসব ফেনীর জনপদে এক নবজাগরণের বার্তা দিয়েছে। অনেক ভোটারের কাছেই এটি ছিল নতুন। এ নির্বাচন ফেনীর স্বেচ্ছাসেবী অঙ্গনে গণতান্ত্রিক চর্চার নতুন দরজা খুলে দিয়েছে।’


ফারুখ হোসেন নামে আরেক ভোটার বলেন, ‘এই নির্বাচন শুধু কমিটি গঠন নয়, বরং ফেনীর গণতান্ত্রিক চর্চার নতুন সূচনা। আশাকরি এ ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে। নতুন নেতৃত্ব জেলাজুড়ে রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম আরও গতিশীল করবে এ প্রত্যাশা।’


প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার অশোক বিক্রম চাকমা বলেন, ‘কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন