দীর্ঘ এ সময় পেরিয়ে গেলেও পদ্মা সেতু থেকে শরীয়তপুর, প্রায় ৩৫ কিলোমিটার সড়কে পরিবহন গুলোর চলাচলের জন্য নেই কোনো রুট পারমিট। ফলে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে ঢাকা-ভাঙ্গা-মাদারীপুর-বরিশাল-পটুয়াখালী-খুলনার রুট পারমিট নিয়ে বেআইনিভাবে চলাচল করছে শরীয়তপুর সদর থেকে পদ্মা সেতু এক্সপ্রেসওয়ের গোল চত্বর পর্যন্ত। অন্যদিকে নড়িয়া উপজেলা থেকে সরাসরি বাস সার্ভিসের জন্যও নেই কোনো রুট পারমিট। কি জন্য এই সড়কে পাচ্ছে না রুট পারমিট তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি পরিবহন মালিক সমিতি কিংবা কর্তৃপক্ষ। পারমিট বিহীন সড়কে চলতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের।
অথচ পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পরে শরীয়তপুরে পরিবহন খাতে বহু অংশে বেড়েছে যাত্রীবাহী বাস। নিয়মিত যুক্তও হচ্ছে নতুন নতুন পরিবহন।
জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চৌকিদার বলেন, বাংলাদেশের এমন কোনো জেলা বা উপজেলা নেই যেখানে ঢাকা থেকে সরাসরি বাস সার্ভিসের রুট পারমিট নেই। কিন্তু শরীয়তপুরের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র দেখছি ভিন্ন। বছরের পর বছর ধরে পরিবহন চালালেও নেই আমাদের রুট পারমিট। আমরা কি এদেশের নাগরিক নয়? আর যদি নাগরিক হয়েই থাকি তবে কেন এই বৈষম্য। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে এর একটি সুষ্ঠু সমাধান চাই।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে সাংবাদিককে মামলায় জড়ানোর হুমকি বিএনপি নেতার
গাড়ি চালক মিজানুর রহমান বলেন, ভিন্ন সড়কের রুট পারমিট নিয়ে চলাচলের কারণে আমাদের মাঝেমধ্যেই ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বিভিন্ন সময়ে মামলাসহ বড় ধরনের জরিমানা করে।
বাসমালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে শরীয়তপুরের রুট পারমিট না থাকায় আমাদেরকে অন্য জেলাগুলোর রুট পারমিট নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে আমরা আর্থিক চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তিন থেকে চার হাজার টাকায় যেখানে বাৎসরিক টাকা দিতে হয় সেখানে খরচ হয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। সরকার যদি রুট পারমিটের ব্যবস্থা করে দিত তবে আমাদের ব্যবসায় কিছুটা উন্নতি হতো। তাহলে যাত্রীদের সেবার মান হয়তো আরো কিছুটা হলে বাড়ানো সম্ভব হতো।
শরীয়তপুর পরিবহন মালিক গ্রুপ এর সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার বলেন, আমরা বারবার রুট পারমিট এর জন্য আবেদনের পরেও অনুমোদন পাই না। শরীয়তপুর-ঢাকা সড়কের বেহাল অবস্থাকেই উত্থাপন করে এ রুট পারমিট দিচ্ছে না এমনটি মনে করছি আমরা। তবে দেশের এমন অনেক জেলাও আছে সড়কের অবস্থা এর চেয়েও খারাপ, তাদের রুট পারমিট হয়। তবে রুট পারমিট একটি জেলার পরিবহন সেক্টরকে অনেকটা এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। তা থেকে আমরা পুরোপুরি ভাবে বঞ্চিত। আমাদেরকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে অন্যান্য জেলার রুট পারমিট নিয়ে এই সড়কে চলাচল করছি।
আরও পড়ুন: যুবদল নেতার চাঁদা দাবি: যাত্রাবাড়ী-শরীয়তপুর রুটে বাস চলাচল বন্ধ
এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এ বিষয়ে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, শরীয়তপুর-ঢাকা সড়কে রুট পারমিট পাওয়ার জন্য জেলা বাস মালিক সমিতির আবেদনের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে। আমরা দ্রুতই এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পরে শরীয়তপুরে নতুন নতুন মডেলের পরিবহনের সংখ্যা এখন প্রায় ৩ শ।