অভিযোগে জানানো হয়, নিলামে রোমিন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা দর দেয়া হয়েছে। তারাই গাছগুলো পেয়েছে। তবে রোমিন এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা আগ্রহী অন্যদের দরপত্র দাখিলে বাধা দিয়েছে। ফলে পানির দরে গাছগুলো নিয়েছে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অন্য চারটি প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে ১৮ লাখ ৪৮ হাজার, ১৮ লাখ, ৮ লাখ ও ৬ লাখ টাকা দর দেয়।
অভিযোগ উঠেছে, ওই পাঁচটি প্রতিষ্ঠান সিন্ডিকেট করে দরপত্র জমা দিয়েছে। তারা অন্য কোনো ব্যক্তিকে দরপত্র জমা দিতে দেয়নি।
এ বিষয়ে শুকুর শেখ, ফারজানা ববি, জাকারিয়া হোসেনসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাদের দাবি, দরপত্রে অংশগ্রহণ করা প্রতিষ্ঠানগুলো একটি চক্র। ওই চক্র অন্যদের দরপত্র জমা দিতে বাধা দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছিল নির্বিকার। এ চক্রের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা জড়িত বলেও অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় কোটি টাকার রাস্তার গাছ নামমাত্র মূল্যে বিক্রির অভিযোগ
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে দেখা গেছে, এক হাজার ৮৫৩টি গাছের ক্ষেত্রে কাঠ ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৬৪০ ঘনফুট, বল্লির পরিমাণ ২২৭টি এবং এসব গাছ থেকে জ্বালানি কাঠ ধরা হয়েছে ৭ হাজার ১৯ ঘনফুট।
তবে পেশাদার কাঠ ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রতি সিএফটি (কিউবিক ফিট) কাঠের দাম ৭০০ টাকা ধরলেও এর মোট দাম হয় ৩৯ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। জ্বালানি কাঠের দাম প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা। আর বল্লিগুলোর দাম পড়ে প্রায় এক লাখ ১৩ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে গাছগুলোর মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৪২ লাখ ২১ হাজার টাকা। অথচ সেই গাছ দরপত্রের ‘সিন্ডিকেট’ হাতিয়ে নিয়েছে মাত্র ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত রোমিন এন্টারপ্রাইজের মালিক আল মামুন (রাব্বুল) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটও নিয়ন্ত্রণ করেন। তবে গাছ নিলামের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট করার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: সরকারি গাছ নিধন: পরস্পরকে দোষারোপ বনবিভাগ-এলজিইডির
দরপত্র দাখিলে অন্য ঠিকাদারদের বাধা দেয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আল মামুন বলেন, ‘আমি যাইনি। আমার লাইসেন্স সর্বোচ্চ দর দিয়ে কাজ পেয়েছে। এলাকার বিএনপির ছোট ভাই-বড় ভাইয়েরা আমার লাইসেন্স নিয়ে দরপত্র দাখিল করেছিলেন। আমি কাউকে দরপত্র দাখিলে বাধা দিইনি।’
এ বিষয়ে কথা বলতে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. জাওয়াদুল হককে কয়েক দফা ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।