রাতে নবীজি বিশেষ কিছু আমল করতেন। ঘুমানো আগে ১. অজু করা। ২. আয়াতুল কুরসি ও সুরা বাকারা শেষ ২ আয়াত পড়া। ৩. সুরা মুলক পড়া এবং ইসতেগফার করা। ৪. তিন কুল তথা সুরা নাস, ফালাক ও ইখলাস পড়া। ৫. সুরা কাফেরুন ও সুরা ফাতেহা পড়া। ৬. তিন তাসবিহ তথা সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার পড়া। ৭. ঘুমানোর আগে দোয়া পড়া ও ডান কাতে শোয়া নবীজির নিত্যদিনের অভ্যাস ছিল।
রাতের আমলে মহাসওয়াব
পবিত্র কোরআন ও হাদিসে শেষ রাতে বিভিন্ন আমলের ওপর উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন,
নিশ্চয়ই রাতে জাগরণ প্রবৃত্তি দমনে অধিক সহায়ক এবং স্পষ্ট উচ্চারণে অনুকূল। (সুরা মুজ্জাম্মিল: ৬)
এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে,
হে বস্ত্রাবৃত! রাত জাগরণ কর কিছু অংশ ব্যতীত। অর্ধরাত কিংবা তদপেক্ষা কিছু কম। অথবা তদপেক্ষা বেশি। আর কোরআন তিলাওয়াত কর ধীরে ধীরে স্পষ্ট করে সুন্দরভাবে। আমি তোমার ওপর অবতীর্ণ করেছি গুরুত্বপূর্ণ বাণী। (সুরা মুজ্জাম্মিল: ১৫)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
আমাদের রব প্রতি রাতে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন, যখন রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকে। তিনি বলেন, কে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব। কে আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দেব; কে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করব। (বুখারি: ১১৪৫)
এ সম্পর্কে হাদিসের কিতাবে এসেছে, হজরত সাদ বিন হিশাম (রহ.) বলেন, আমি বললাম হে উম্মুল মুমিনিন, আপনি আমাকে রাসুল (সা.)-এর আখলাক চরিত্র বিষয়ে কিছু বলুন। আম্মাজান আয়েশা (রা.) বলেন, তুমি কি কোরআন পড়ো না? রাসুল (সা.)-এর আখলাক চরিত্র কোরআনে যা আছে তাই ছিল। তারপর সাদ বলেন, আপনি আমাকে রাসুল (সা.) এর রাতের নামাজের ব্যাপারে বলুন। তখন আম্মাজান আয়েশা (রা.) বলেন তুমি কি ‘ইয়া আইয়্যুহাল মুজ্জাম্মিল’ পড়ো না?
আরও পড়ুন: জান্নাত লাভের সহজ তিন আমল
হজরত সাদ বলেন, হ্যাঁ আমি পড়ি তো। আম্মাজান আয়েশা (রা.) বলেন যখন এ সুরার প্রথমাংশ নাজিল হয় (যাতে তাহাজ্জুদ ফরজ হয়) তখন সাহাবায়ে-কেরাম এত দীর্ঘ তাহাজ্জুদ পড?তেন যে, তাদের পা ফুলে যেত। আর এ সুরার শেষাংশ বারো মাস পর্যন্ত আসমানে আটকে থাকে। ১২ মাস পর যখন এর শেষাংশ নাজিল হয়, তখন যে তাহাজ্জুদ ফরজ ছিল তা নফল হয়ে যায়। (সুনানে আবু দাউদণ্ড১/১৮৯-১৯৯)।
]]>