রাতে ঘুম না এলে যে আমল করবেন

২ দিন আগে
ঘুম মহান আল্লাহর অনন্য নেয়ামত। এটি মানুষের ক্লান্তি দূর করে। প্রশান্তির ঘুম করে তুলে সতেজ ও প্রাণবন্ত। নতুন উদ্যোমে কাজ করার প্রেরণা জোগায় এটি। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আর আমি তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী। রাত্রিকে করেছি আবরণ।’ (সুরা নাবা: ৯-১০)।

আমরা রিজিক বলতে শুধুমাত্র খাবারকেই মনে করি। ভালো ঘুম হওয়াও মহান আল্লাহর বড় নিয়ামত। খাবার, টাকা-পয়সা হলো রিজিকের অনেকগুলো ভাগের মধ্যে একটি ভাগ। এর বাইরেও অনেক রিজিক আছে যেগুলোকে আমরা ‘রিজিক’ মনে করি না!

 

একজন সাহাবির রাতে ঠিকমতো ঘুম হতো না। তিনি ঘুমানোর অনেক চেষ্টা করতেন, অনেক দুআ পড়তেন। তবুও তার ঘুম আসতো না। তার নাম ছিলো যায়িদ ইবনে সাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহু; বিখ্যাত ওহী লেখক সাহাবি। তিনি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গিয়ে তার অনিদ্রার কথা জানান। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত যায়িদ ইবনে সাবিতকে একটি দুআ শিখিয়ে দিলেন।

 

আরও পড়ুন: জান্নাতের দরজা কয়টি ও কী কী?

 

দোয়াটি হলো,

 

اَللّٰهُمَّ غَارَتِ النُّجُوْمُ، وَهَدَأَتِ الْعُيُوْنُ، وَأَنْتَ حَيٌّ قَيُّوْمٌ، لاَ تَأْخُذُكَ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ أَهْدِئْ لَيْلِيْ، وَأَنِمْ عَيْنِيْ

 

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা গারাতিন নুজুমু, ওয়া হাদাআতিল উয়ুনু, ওয়া আনতা হাইয়ুন কাইয়ুমুন, লা তা'খুযু কা ছিনাতুন ওয়ালা নাওম। ইয়া হাইয়ু ইয়া কাইয়ুমু, আহদি' লাইলি ওয়া আনিম আইনি। (তাবরানি: ৪৮১৭)

 

অর্থ: হে আল্লাহ! আকাশের তারাগুলো নিভে যাচ্ছে, কিন্তু আমার চোখ এখনো জাগ্রত। আর আপনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী, ঘুম বা তন্দ্রা আপনাকে পরাভূত করতে পারে না। হে চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী, আমার রাতকে প্রশান্তিময় করুন এবং আমার চোখে ঘুম এনে দিন।

 

কী সুন্দর দোয়া! এই দোয়া আমল করার পর যায়িদ ইবনে সাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহুর অনিদ্রা সমস্যা কেটে যায়। আরেকবার বিখ্যাত সাহাবী খালিদ ইবনে ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহুও রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে যান একই সমস্যা নিয়ে। রসুলুল্লাহ রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তাকেও একটি দুআ শিখিয়ে দেন। (জামে আত-তিরমিজি: ৩৫২৩)

 

اَللّٰهُمَّ رَبَّ السَّمَوَاتِ السَّبْعِ وَمَا اَظَلَّتْ وَرَبَّ الْاَرَضِيْنَ وَمَا اَقَلَّتْ وَرَبَّ الشَّيَاطِيْنَ وَمَا اَضَلَّتْ كُنْ لِّيْ جَارًا مِّنْ شَرِّ خَلْقِكَ كُلِّهِمْ جَمِيْعًا اَنْ يَفْرُطَ عَلَيَّ اَحَدٌ مِّنْهُمْ اَوْ اَنْ يَّبْغِيَ عَزَّ جَارُكَ وَجَلَّ ثَنَاؤُكَ لَاۤ اِلٰهَ غَيْرُكَ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اَنْتَ

 

উচ্চারণ: আল্লাাহুম্মা রব্বাস সামাওয়াা তিস সাব‘ই ওয়ামাা আযা ল্লাত ওয়া রব্বাল আরাযীনা ওয়ামাা আক্বাল লাত ওয়া রব্বাশ শায়াা ত্বীনি ওয়ামাা আযাল লাত কুন লী জাা রন মিন শাররি খলক্বিকা কুল্লিহিম জামী‘আন আন ইয়াফরুত্বা ‘আলাইয়্যা আহাদুন মিনহুম আউ আন ইয়াবগিয়া ‘আযযা জাা রুকা ওয়া জাল্লা সানাা উকা ওয়ালাা ইলাহা গইরুকা লাা ইলাাহা ইল্লাা আনতা।

 

আরও পড়ুন: নবীজি (সা.)-এর মা-বাবার যেভাবে বিয়ে হয়েছিল


 

অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি সপ্ত আকাশের প্রতিপালক এবং ঐ সকল বস্তুর প্রতিপালক, যার উপর সপ্তম আকাশ বিস্তার করে আছে এবং যিনি সমগ্র জমিনের প্রতিপালক এবং ঐ সকল বস্তুর প্রতিপালক যা সমগ্র জমিন বহন করে আছে এবং যিনি শয়তান ও ঐ লোকদের প্রতিপালক যাদেরকে শয়তান গোমরা করেছে।

 

হে প্রতিপালক আল্লাহ! আপনি সমগ্র মাখলুকের অনিষ্ট হতে আমার রক্ষাকারী এবং আশ্রয়দাতা হয়ে যান। যাতে এ সকল মাখলুকের মধ্য হতে কোন মাখলুক আমার উপর অত্যাচার-অবিচার করতে না পারে। নিশ্চয়ই একমাত্র আপনার আশ্রিত ব্যক্তিই প্রভাবশালী নিরাপদ এবং একমাত্র আপনার প্রশংসাই অতি মহান। আপনি ছাড়া অপর কোনো মা‘বুদ নেই। একমাত্র আপনি ইবাদতের যোগ্য।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন