রাজশাহীর অধিকাংশ হাসপাতাল-ক্লিনিকের নেই নিবন্ধন

২ সপ্তাহ আগে
রাজশাহীতে ৯৪ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। নগর ও জেলার ৫৮৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮৬টির কোনো নিবন্ধন নেই। তবে ৪০০টি নিবন্ধিত হলেও আড়াইশটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, অদক্ষ জনবল ও অননুমোদিত পদ্ধতিতে চিকিৎসা সেবা দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান আয় করছে মোটা অঙ্কের টাকা। সেইসঙ্গে নিবন্ধন নবায়ন না করেই এসব প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালিয়ে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে।

 

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ‘পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া কোনো ক্লিনিক, হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিবন্ধিত হতে পারবে না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকলে ছাড়পত্র দেয়া হয় না।’

 

পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন, ২০১০ অনুযায়ী, পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া কোনো বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের অনুমতি পায় না।

 

আরও পড়ুন: রাজশাহীতে প্রকাশ্যে চলছে ফসলি জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন

 

সরেজমিনে তানোর উপজেলায় গিয়ে দেখা যায়, তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে একটি ছোট ঘরে চলছে ‘প্রাইম ডায়াগনস্টিক’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। অথচ সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, প্রতিষ্ঠানটি নগরীর রাজপাড়া ঠিকানায় নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ঠিকানা পরিবর্তন করে কার্যক্রম পরিচালনা করা বেআইনি।

 

২০২৩ সালে তানোরের ‘মহানগর ক্লিনিক’-এ পিত্তথলির অপারেশনে মারা যান এক নারী। অভিযোগ রয়েছে, ক্লিনিকের ম্যানেজার চিকিৎসক না হয়েও অপারেশন করেন, যার ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। স্থানীয়দের দাবি, এখনও পরিস্থিতির উন্নয়ন হয়নি।

 

তানোর উপজেলায় ২২টি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠানের রয়েছে পরিবেশ ছাড়পত্র। বেশিরভাগেরই নেই সঠিক নিবন্ধন ও দক্ষ জনবল। অভিযোগ রয়েছে, অদক্ষ কর্মী দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে। নেই প্যাথলজিস্ট, টেকনিশিয়ান ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি।

 

 

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীতে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ৫৮৬টি। এর মধ্যে মাত্র ৩৪টি প্রতিষ্ঠানের রয়েছে পরিবেশ ছাড়পত্র। ১৮৬টি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন ছাড়াই কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং ২৫০টির মেয়াদোত্তীর্ণ নিবন্ধন নবায়ন করা হয়নি।

 

রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. এস.আই.এম. রাজিউল করিম বলেন, ‘অবৈধভাবে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

 

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে স্বাস্থ্য বিভাগ অভিযান চালিয়ে রাজশাহীর ৪০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ও সিলগালা করেছিল। কিন্তু বর্তমানে সেসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগই পুনরায় কার্যক্রম শুরু করেছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন