রাজশাহীতে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরির অভিযোগ, বিপাকে কৃষকরা

৩ সপ্তাহ আগে
রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ডিলাররা সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বিক্রি করছেন বেশি দামে। কৃষকদের অভিযোগ, অনেক ডিলার আবার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করলেও তাদের সার দিচ্ছেন না। বাধ্য হয়ে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে বাড়তি দামে সার কিনতে হচ্ছে। এতে বাড়ছে উৎপাদন ব্যয়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ডিলারদের দাবি, সরকার নির্ধারিত দামেই তারা সার বিক্রি করছেন।

রাজশাহী অঞ্চলের বরেন্দ্রের মাঠে মাঠে এখন হরেক রকম ফসলের সমারোহ। রবি শস্য শিম, আলু, ফুলকপি, সরিষা, ভুট্টা, গম, পেঁয়াজ ও রসুন আবাদে ব্যস্ত কৃষকরা। ভালো ফলনের আশায় জমিতে সেচের পাশাপাশি ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএফপি ও এমওপি সার দিচ্ছেন তারা।

 

তবে কৃষকদের অভিযোগ, ডিলাররা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ৫০ কেজির এক বস্তা সার বিক্রি করছেন সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি দামে। কোনো কোনো ডিলার ব্যবসায়ীদের কাছে সার বিক্রি করলেও কৃষকদের দিতে গড়িমসি করছেন। বাধ্য হয়ে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বাড়তি দামে সার কিনতে হচ্ছে।

 

আরও পড়ুন: সারের দাম বাড়ায় বেকায়দায় রংপুরের কৃষকরা

 

নওগাঁয় ১২ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া ও এমওপি সার উত্তোলন করেছে ডিলাররা। তবে প্রান্তিক পর্যায়ে ডিলাররা সারের সংকট দেখিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে কেজিপ্রতি চার থেকে পাঁচ টাকা বেশি নিচ্ছেন। নাটোরেও ইউরিয়া, ডিএফপি ও এমওপি সার কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাড়তি দামে সার বিক্রি করায় কৃষকদের হাতে রসিদ দিচ্ছেন না ডিলাররা।

 

বগুড়ায় কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বাড়তি দামে ইউরিয়ার, টিএসপি ও এমওপি সার কিনতে হচ্ছে কৃষকদের। এতে বাড়ছে উৎপাদন ব্যয়। আর সিরাজগঞ্জে প্রতিবছরই বাড়ছে সারের দাম। এতে উৎপাদন খরচ বাড়লেও ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না কৃষক।

 

এর জন্য সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন কৃষকরা। তারা বলেন, ডিলাররা পর্যাপ্ত পরিমাণে সরকারের দেয়া কম মূল্যের সার দিচ্ছে না। পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রেই সার কেনাবেচার রসিদ দিচ্ছে না।

 

মাঠ পর্যায়ে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলেও বেশিরভাগ ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীর দাবি, সারের কিছুটা স্বল্পতা রয়েছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি করা হচ্ছে।

 

বরাবরের মতো ডিলারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস জেলা প্রশাসক ও কৃষি বিভাগের দায়িত্বশীলদের। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোছা. উম্মে ছালমা বলেন, রাজশাহী জেলায় সারের কোনো সমস্যা নেই। কেউ যাতে বেশি দামে সার বিক্রি করতে না পারে সেজন্য দোকানগুলো মূল্যতালিকা টানানো রয়েছে।

 

আরও পড়ুন: বীজ আলু ও সারের দামে বেকায়দায় জয়পুরহাটের কৃষকরা

 

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘কেউ যাতে বেশি দামে সার বিক্রি করতে না পারে, সেজন্য মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।’

 

আর নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহিন বলেন, ‘বাজার যাচাই-বাছাই করা হবে। কোনো অভিযোগ বা অনিয়ম পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 

উল্লেখ্য, রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় সারের ডিলার রয়েছেন প্রায় দুই হাজার। শুধু রবি মৌসুমে তাদের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ১১ লাখ মেট্রিক টন সার।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন