রাজশাহীতে মৃতপ্রায় ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

১ সপ্তাহে আগে
রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। একসময় কুমারপাড়ার দৃষ্টিনন্দন হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা ও নানা সামগ্রী থেকে জীবিকা নির্বাহ করতো শত শত পরিবার। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়া, প্লাস্টিক ও স্টিলের সহজলভ্যতা এবং নানা সংকটে এই শতবর্ষী ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে।

গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী একসময় মৃৎশিল্পের প্রাণকেন্দ্র ছিল। এখানকার কারিগরদের তৈরি হাঁড়ি-পাতিলের চাহিদা ছিল গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত। কিন্তু বর্তমানে সেই চাহিদা না থাকায় অনেকেই ছেড়ে দিয়েছেন পৈতৃক পেশা।

 

স্থানীয় কারিগর প্রশান্ত কুমার বলেন, ‘আগে মাসে ৩০-৪০ সেট হাঁড়ি পাতিল বিক্রি হতো। এখন কষ্ট করে ৪-৫ সেট বিক্রি হয়। সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে।’

 

তবুও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে লড়াই করছেন কেউ কেউ। তবে নতুন প্রজন্ম এই পেশায় আসতে অনাগ্রহী।

 

কারিগর দেবি রাণী বলেন, ‘আমরা কষ্ট করে করছি, কিন্তু ছেলেমেয়েরা এই পেশায় আসবে না। কারণ এতে ভবিষ্যৎ নিরাপদ নয়।’

 

আরও পড়ুন: বাগেরহাটে মুখ থুবড়ে পড়েছে মৃৎশিল্প, ঘুরে দাঁড়াতে চান শিল্পীরা

 

যদিও হাঁড়ি-পাতিলের ব্যবহার কমেছে, তবু বাজারে এখনো মাটির সৌখিন সামগ্রীর কদর রয়েছে। তবে স্থানীয় মাটির মান শো-পিস তৈরির উপযোগী নয়। তাই অনেক ব্যবসায়ী যশোর ও বরিশাল থেকে মাটি কিংবা প্রস্তুত পণ্য এনে বিক্রি করছেন।

 

ব্যবসায়ী নিপুন পাল বলেন, ‘এখানকার মাটি দিয়ে শো-পিস বানানো যায় না। তাই আমরা বাইরে থেকে পণ্য এনে বিক্রি করি।’

 

বিসিক রাজশাহীর উপ-ব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মৃৎশিল্প টিকিয়ে রাখতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহায়তার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এ খাতের জন্য সরকারের আলাদা কোনো উদ্যোগ এখনো নেই।’

 

মৃৎশিল্প শুধু জীবিকার মাধ্যমই ছিল না, এটি রাজশাহীর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীকও। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সরকারি সহায়তা ছাড়া এই ঐতিহ্য পুরোপুরি বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন