এরমধ্যে প্রশস্ত রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্টের পাশাপাশি নগরীতে চারটি ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ চলছিল দ্রুত গতিতে। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলে অনেক ঠিকাদার কাজ ফেলে পালিয়ে যান। এরপর কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর আবারো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও ধীরগতির কারণে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন নগরবাসী। বিভিন্ন যানবাহন চালকরা জানান, একটু বৃষ্টি কাঁদাতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে অনেক রাস্তা।
নওগাঁ:
নওগাঁয় বিপুল গ্রামীণ সড়ক জেলা পরিষদের অডিটোরিয়াম সহ শত কোটি টাকার প্রকল্প থমকে আছে। ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর ঠিকাদার লাপাত্তা হয়ে যাওয়ায় এসব কাজের গতি হারিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের মশরপুর এলাকায় এক হাজার আসন বিশিষ্ট অডিটোরিয়াম কাম-মাল্টিপারপাস হল’ নির্মাণে শুরু হয় ২০১৯ সালে। কিন্ত ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়ায় কাজটি বন্ধ আছে। এছাড়া নওগাঁর নওহাটা মোড়ে প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যায়ে খাদ্য গুদাম কাজ বন্ধ করে পালিয়ে গেছে ঠিকাদার। এছাড়া গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামোর সহ নানা স্থাপনার কাজ থমকে আছে জেলায়। নওগাঁ জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল জানান, নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বগুড়া :
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বগুড়ার ফতেহ আলী সেতু পুনর্নির্মাণে কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। ১৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ের এই সেতু নির্মাণে কাজ দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল গত ৩০ মে। তবে তিনদফায় মেয়াদ বাড়লে এখনও বাকি আছে সেতুর ৩০ শতাংশ কাজ। এতে বগুড়া শহরের পূর্বপ্রান্ত ও তিন উপজেলার লাখ লাখ বাসিন্দা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় করতোয়া নদী খনন, পাড় নির্মাণ ও সুবিল খাল খননে ৪৭ কোটি টাকার কাজ চলমান আছে। এছাড়াও বাঙালি নদীতে বাধ নির্মাণ ও খননের সেনাবাহিনীর তত্ত্ববধানে ২ হাজার ৩৩০ কোটি টাকার কাজ চলমান আছে। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, চলতি অর্থবছরে বৃহৎ এই দুই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে পদ্মার আই বাঁধের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ
সিরাজগঞ্জ :
সিরাজগঞ্জেও বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে অনেকটা ধীর গতিতে। সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতায় নলকা সিরাজগঞ্জ সয়দাবাদ আঞ্চলিক সড়কের চার লেনে উন্নীতকরণ ও অবশিষ্ট অংশ দুই লেনে উন্নীতকরন প্রকল্পে কাজ দীর্ঘদিন ধরে চললেও তা এখনো শেষ হয়নি। মোট ২১.৭৪ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন কাজের মধ্যে খেদন সরদারের মোড় থেকে বাজার স্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, কাজীপুর মোড়ে বিভিন্ন অংশে এখনো অনেকটা কাজ বাকি রয়েছে। ২০১৭ সালে শুরু হওয়া প্রায় ৩২ কোটি টাকা ব্যায়ে প্রকল্পের কাজ কয়েক দফা মেয়াদ বাড়লেও এখনো এসব অংশের কাজ শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এতে চরম দুর্ভোগে এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকদের।
ঠিকাদাররা নানা অজুহাত দেখালেও স্বীকার করেছেন কাজের ধীরগতির কথা। তাই কয়েক দফা মেয়াদ বাড়লেও নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ করা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জনদূর্ভোগ কমাতে ঠিকাদারদের নির্দেশ দিয়েছেন গুণগত মান ঠিক রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জানান রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ।
বিভাগের আটটি জেলায় দেড়শো অধিক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। এসব কাজে ব্যয় হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা।
]]>